ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

পাখির জন‌্য টিনের চালের ক্ষতি, তাই ধরে প্রকাশ‌্যে বিক্রি 

তরিকুল ইসলাম জেন্টু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ১ অক্টোবর ২০২০  
পাখির জন‌্য টিনের চালের ক্ষতি, তাই ধরে প্রকাশ‌্যে বিক্রি 

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর শহরের হলুদঘর মহল্লায় প্রকাণ্ড এক তেঁতুলগাছে বর্ষায় আশ্রয় নেয় নানা প্রজাতির পাখি। এই পাখিগুলোকে ধরে বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ‌্যে। পাখি শিকারিরা বলছেন, পাখির জন‌্য টিনের চাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেই এগুলো ধরে বিক্রি করছেন তারা। 

এলাকাবাসী জানান, হলুদঘর মহল্লায় প্রকাণ্ড এক তেঁতুলগাছে বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর আশ্রয় নেয় বক, পানকৌড়ি, রাতচোরাসহ বেশ কিছু প্রজাতির পাখি। শীত মৌসুম এলে এসব পাখি চলে যায় অন্যত্র। এবছরও ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করেছে এসব পাখি। পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে হলুদঘর মহল্লা। কিন্তু গাছ সংলগ্ন বাড়ির মালিক সাদ্দাম হোসেন ও ইলিয়াছ আলী গত কয়েক বছর ধরে কৌশলে এসব পাখি ধরে পাড়া-মহল্লায় প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। 

ওই মহল্লার নাছিম, শাওন, রিংকু ও সনিসহ বেশ কয়েকজন যুবক জানান, পাখি শিকারিরা প্রভাবশালী হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যায় না। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় তারা আকাশ থেকে বৃষ্টি নামার সময় বেশ কিছু পানকৌড়ি গাছ থেকে নামিয়ে ওই মহল্লায় প্রকাশ্যে বিক্রি করেছেন। এসময় তারা বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্তরা। বিষয়টি তারা স্থানীয় পুলিশকে জানিয়েছেন। পাখি শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও এ ব্যাপারে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

জানতে চাইলে পাখি নিধনে অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘গাছে প্রচুর পাখি এসে বসে। এতে সবসময় কিচিরমিচির লেগেই থাকে। পাখির শব্দের কারণে শান্তিতে বিশ্রামও করতে পারি না আমরা। পাখির শব্দ কানে লাগে। তাই একটু স্বস্তি পেতেই পাখি ধরি, চাহিদা থাকায় বিক্রিও করি।’

পাখি শিকারে অভিযুক্ত ইলিয়াছ আলী বলেন, ‘পাখির নড়াচড়ায় গাছের ছোট মরা ডালগুলো ও মল পড়ে বাড়ির চালের টিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে পাখিগুলো ধরে বিক্রি করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিন জানান, বন্যপ্রাণী আইনে পাখি শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালে বন্য প্রাণি রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দণ্ডের বিধান রয়েছে। এ আইনে পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা দণ্ডিত বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এ আইনের কোনো প্রয়োগ হচ্ছে না।

আদমদীঘি/জেন্টু/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়