ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাবা দুই ভোটে ফেল করেছিলেন, জিতে দেখালেন তিনকন্যা 

এম এম আরিফুল ইসলাম, নাটোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ৭ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৯:০০, ৭ জানুয়ারি ২০২২
বাবা দুই ভোটে ফেল করেছিলেন, জিতে দেখালেন তিনকন্যা 

‘তিনকন্যা’ এক ছবি- চন্দা চম্পা আর ববি। সিনেমার তিনকন্যার গল্প নয়। নাটোরের নলডাঙ্গার তিনকন্যাকে নিয়ে হয়তো লেখা হবে নতুন কোনো গল্প। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই তিনকন্যা জয়ী হয়েছেন। ভোটযুদ্ধে তারা ভুলে যাননি সেই দুঃখস্মৃতি- বাবা একবার মাত্র দুই ভোটে নির্বাচনে হেরেছিলেন। ফলে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনকন্যা। সেই চ্যালেঞ্জে তারা ভালোভাবেই উতরে গেছেন।  

ভোটযুদ্ধে জিতেই তিনকন্যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- সেবা নেওয়ার জন্য কোনো ভোটারকে তাদের দ্বারে ঘুরতে হবে না। তারাই যাবেন ভোটারের ঘরে ঘরে। পৌঁছে দেবেন সরকারি সুযোগ-সুবিধা। উল্লেখ্য যে, তাদের মা আলেয়া বেগমও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের মেম্বারের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। মায়ের দেখানো পথেই হাঁটবেন তিন মেয়ে।   

পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বড় মেয়ে হালিমা বেগম (৪৩) নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলার বিপ্র বেলঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। মেজ মেয়ে নাসিমা বেগম (৪১) নির্বাচিত হয়েছেন একই ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। ছোট মেয়ে শাহনাজ পারভীন (৩৯) নির্বাচিত হয়েছেন একই উপজেলার ছাতনী ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে।  

হালিমা বেগম বলেন, ‘আমার বাবা আব্দুস সাত্তার একবার মেম্বার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে মাত্র দুই ভোটে পরাজিত হন। আমরা সেই কষ্ট আজও ভুলতে পারিনি। বাবা আজ নেই। কিন্তু মা একাধিকবার সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মহিলা মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন। মানুষের সেবা করে তাদের দোয়া ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন। তার বয়স হয়েছে। বাবা-মার দেখানো পথে আমরা হাঁটতে চাই।’

‘যখন আমরা তিন বোন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলাম, তখন বাবার কথা যেমন মনে পড়েছে, তেমনি মায়ের কাজ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। মায়ের মানবসেবা দেখেই আমরা ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম’, বলেন হালিমা বেগম।

এদিকে তিনকন্যা একসঙ্গে ভোটে জেতায় আলেয়া বেগম দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘এলাকার মানুষ তাদের (তিন মেয়েকে) মন উজাড় করে ভোট দিয়েছে। ব্যাপক ব্যবধানে নির্বাচিত করেছে। ফলে তাদের দায়িত্ব বেড়ে গেল। এখন তারা প্রতিদিন এলাকায় ঘুরে মানুষের সমস্যা শুনবে, তাদের পাশে দাঁড়াবে।’ 

এমন বিজয়ে তিন বোনের কৃষক স্বামীদেরও ছিল সক্রিয় ভূমিকা। পরিবার, প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও মিলেছে সমর্থন। নলডাঙ্গা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. অধ্যাপক জিয়াউল হক জিয়া, স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা জামিল হায়দার জনি, হুমায়ুন কবীর পলাশসহ স্থানীয় অনেকেই তিনকন্যার বিপুল বিজয়ে উচ্ছ্বসিত। এবার তিনজন তাদের দায়িত্ব পালন করবেন স্থানীয়দের এটুকুই প্রত্যাশা। 

/তারা/ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়