ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিদ্যা দেবীর আরাধনায় জবিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

জবি সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ২২:৫০, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩
বিদ্যা দেবীর আরাধনায় জবিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফুটতেই শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা। বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন হিন্দু ধর্মাবলাম্বীরা। অন্যান্য বছরের মতো এবারও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে সরস্বতী পূজা। এবার মোট ৩৬টি মণ্ডপে পূজা উদযাপনের জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। 

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, পূজার মণ্ডপ তৈরি ও সাজসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতন শিক্ষার্থীরা। বেশ কিছুদিন ধরেই সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি কাজ করছেন তারা। শেষ দিনে মণ্ডপ সাজসজ্জার প্রস্তুতিতে সে ব্যস্ততা আরও বেড়েছে।

এছাড়াও সরস্বতী পূজা উদযাপন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পূজা উপলক্ষে বসানো হয়েছে বিশেষ ফটক ও ভবনগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়।

মণ্ডপ সাজানোর কাজে ব্যস্ত চারুকলা বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী নাইম মৃধা বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই আমরা কাজ করছি। গতকাল সারারাত কাজ করে এখনও শেষ করতে পারিনি। আমরা এবার ব্যতিক্রমভাবে পূজা উদযাপন করতে যাচ্ছি। ট্যাপা পুতুলকে আমরা সরস্বতীরুপে প্রতিষ্ঠা করবো। রাতের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তাই এখন ব্যস্ততা একটু বেশি।’

মণ্ডপ সাজানোর কাজে ব্যস্ত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী টুম্পা সুতার বলেন, ‘পূজার মণ্ডপ সাজানোর কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু আলপনার কাজ বাকি। আমাদের বিভাগের মণ্ডপটি যেন অন্য সবার চেয়ে ব্যতিক্রম ও আকর্ষণীয় হয় সেই চেষ্টা করছি।' 

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩৬টি মণ্ডপে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে ৩৩টি বিভাগ, ২টি ইনস্টিটিউট ও একটি ছাত্রী হলের মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে। আগামীকাল সকাল থেকেই বিদ্যা দেবীর আরাধনা শুরু হবে। 

সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি মণ্ডপে পূজার প্রস্তুতি চলছে। প্রস্তুতি প্রায় শেষ। কাল সকাল থেকেই বিদ্যা দেবীর আরাধনা শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যাদেবীকে সন্তুষ্ট করে শিক্ষা অর্জনের পথ সুগম করাই সরস্বতী পূজার অন্যতম লক্ষ্য। এখন সরস্বতী পূজা শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন অসাম্প্রদায়িক উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি সার্বজনীন স্থান। বরাবরের মতো এবারও সম্প্রীতি বজায় থাকবে।’

সরস্বতী পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে ক্যাম্পাসে প্রতিবারের মতো এবারও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। প্রক্টরিয়াল বডিসহ পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।’

উল্লেখ্য, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। শাস্ত্রমতে, সরস্বতী হলেন জ্ঞান, বিদ্যা, সংস্কৃতি ও শুদ্ধতার দেবী। সৌম্যাবয়ব, শুভ্র বসন, হংস-সম্বলিত, পুস্তক ও বীণা ধারিণী এই দেবী বাঙালির মানসলোকে এমন এক প্রতিমূর্তিতে বিরাজিত, যেখানে কোনো অন্ধকার নেই, নেই অজ্ঞানতা বা সংস্কারের কালো ছায়া।

মো. মেহেদী হাসান/ফিরোজ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়