ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধারে গাইড বাঁধ নির্মাণের উদ‌্যোগ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১২, ২৬ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২২:১৪, ২৬ অক্টোবর ২০২০
বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধারে গাইড বাঁধ নির্মাণের উদ‌্যোগ

বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় আরও ৩৭০ মিটার গাইড বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় হবে ৫০ কোটি ৬২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। নির্মাতা সংস্থা এলএ-টিটিসিএল যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

সূত্র জানায়, যমুনা নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করে নিউ ধলেশ্বরী নদী পুংলী-বংশাই-তুরাগ হয়ে ১৬২.৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বুড়িগঙ্গায় মিলিত হয়েছে। যমুনা নদী থেকে পলিমিশ্রিত পানি নিউ ধলেশ্বরীতে আসার ফলে নদীর তলদেশ পলি দিয়ে ভরাট হচ্ছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানিপ্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে পলির উৎসমুখের ১ হাজার ১০০ মিটার ভেতরে সেডিমেন্ট বেসিনে পলি জমা করে প্রতিবছর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ড্রেজিং চালু রেখে শুষ্ক মৌসুমে যমুনার পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। এজন্য ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১০ সালের ৬ এপ্রিল একনেক সভায় ৯৪৪ কোটি ৯ লাখ টাকার ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ বুড়িগঙ্গা) রিভার সিস্টেম’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।

সূত্র জানায়,পরবর্তীতে যমুনা ও নিউ ধলেশ্বরীর উৎসমুখে নদীর উভয় পাশে তীরভাঙন রোধে সিসি ব্লক দিয়ে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থাসহ ১.৫৩ কিলোমিটার গাইড বাঁধ নির্মাণের অর্থ সংস্থান রেখে ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়। দ্বিতীয় সংশোধন অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এবং প্রাক্কলিত ব্যয় ১১২ কোটি ৫ লাখ টাকা করা হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫১.৫০ শতাংশ।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি চারটি লটে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনটি লটের কার্যাদেশ গত ২০১৮ সালে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে প্রকল্পের ৩ নম্বর লটের দরপত্রে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৭.৪৩ শতাংশ ঊর্ধ্ব দর হওয়ায় মূল্যায়ন কমিটি এ লটের দরপত্র পুনরায় আহ্বানের সুপারিশ করে। পাশাপাশি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ থেকে বাকি তিনটি লটের কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয় প্রকল্পের গাইড বাঁধ নির্মাণ দ্রুত শেষ করার সুপারিশ করে।

সূত্র জানায়, ঢাকা শহরের চারপাশের নদীগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধি, নদীর ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে একটি মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যমুনা নদী থেকে শুষ্ক মৌসুমে ১৪১ কিউসেক পানি নিউ ধলেশ্বরী, বংশী, পুংলী এবং তুরাগ নদী দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে আনা সম্ভব হবে। ফলে অতিরিক্ত পানিপ্রবাহ বুড়িগঙ্গা নদীর পানিদূষণ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে, যা মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের ৩ নম্বর লটের জন্য মোট পাঁচ বার দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম বার দুটি, দ্বিতীয় বার দুটি, এবং চতুর্থ বার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়। পঞ্চম বার দরপত্র আহ্বান করা হলে এতে দুটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত দর ৫৬ কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯২২ টাকা। এরমধ্যে এলএ-টিটিসিএল ৫০ কোটি ৬২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩০ টাকা উল্লেখ করে, যা প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১০ শতাংশ কম। অপর প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড ৫৪ কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯২২ টাকা উল্লেখ করে, যা প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ২.৫ শতাংশ কম। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এলএ-টিটিসিএ কে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দিতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। যা পরবর্তী সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়