ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৫, ১৯ আগস্ট ২০২২  
বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

তিন দিনের ছুটি কাটাতে অনেকেই ছুটে এসেছেন কক্সবাজারে।

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এমন বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে কক্সবাজারে সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশি বিদেশি পর্যটকরা। 

জন্মাষ্টমী ও সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) থেকে পর্যটকের ভিড় জমতে শুরে করে সৈকতের শহর কক্সবাজারে। 

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকরা সমুদ্রজলে গাঁ ভাসিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দে মেতেছেন। কেউ কেউ জেটস্কিতে করে গভীর পানি থেকে ঘুরে আসছেন। আবার কেউ কেউ ঘোড়ায় চড়ে ছবি ধারণের মাধ্যমে মিটিয়ে নিচ্ছেন রাজার সাধ। 

প্রিয় মানুষটির হাতে হাত রেখে গুড়ালি সমান পানিতে পা ভেজাচ্ছেন যুগলরা। 

নওগাঁর পত্নীতলা থেকে আসা ইসমাইল-সুজনা নবদম্পতি বলেন, 'এক বছর আগেও সিঙ্গেল ছবি তুলে গেছি কক্সবাজার থেকে। এখন বউয়ের সঙ্গে ছবি তুলি। অনেক আনন্দ উপভোগ করছি। বৃহস্পতিবার এসেছি কক্সবাজারে। আজ সারাদিন আছি। কিছু পণ্যসামগ্রী কেনাকাটা করে রাতের বাস ধরবো।'

জামালপুরের বকশীগঞ্জ থেকে সপরিবারে এসেছে জসিম উদ্দিন মিয়াজি। নাতি-নাতনীদের সঙ্গে খেলা করছেন বালিয়াড়িতে। তিনি বলেন, 'আমার স্ত্রী, ছেলে-বউমা পানির কাছে আমি নাতি-নাতনীদের সঙ্গে বালিয়াড়িতে খেলা করছি। ছোট নাতি-নাতনীরা বড় বড় ঢেউকে ভয় পাচ্ছে। কক্সবাজার প্রতিবছর আসি আমরা। এ বছরের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। কেমন জানি সমুদ্রটা কাছে চলে এসেছে। সৈকতের ভাঙন দেখে মনটা একটু খারাপ। তারপরও পরিবারের সঙ্গে সময়টা ভালো কাটানোর চেষ্টা করছি।'

কুমিল্লার লাকসাম থেকে আসা বাদল শর্মা বলেন, 'ধর্মীয় উৎসব জন্মাষ্টমীতে ছেলে-মেয়েরা কক্সবাজার আসার বায়না ধরে। আর পারলাম না। এদিকে সপ্তাহিক ছুটিও রয়েছে। সবমিলিয়ে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার আসলাম। এতো বড় সাগর আর বালুকাময় সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মনটা ভরে গেল। আমার সন্তানরাও খুশি। সন্তানদের ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়ে ঘোড়া এবং বিচ বাইকে নিজেকেও চড়তে হলো। এবারের কক্সবাজার ভ্রমণটা ভালো যাচ্ছে।'

এদিকে বর্ষা মৌসুমে অধিক পর্যটকের উপস্থিতিতে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ‍মুখে  হাসি ফুটেছে। তারা বলেন, 'অনেক সংকট কাটিয়ে আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। বর্ষা মৌসুমেও কক্সবাজারে পর্যটনের আগমন দেখে আমরা আশা করছি ভালো ব্যবসা হবে।’

হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, 'বর্তমানে কক্সবাজারে ২ লাখ পর্যটক অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেলের ৮০ শতাংশের উপরে রুম বুকিং হয়ে গেছে। রাতে আরো পর্যটক এসে শতভাগ পূরণ হয়ে যাবে হোটেলের রুম। তবে লোডশেডিংয়ের কারণে পর্যটকরা অতিষ্ঠ। সেকারণে আমাদের সমস্যা হচ্ছে।'

এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে কক্সবাজারে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্রে এখনো ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ মিয়া।

তিনি বলেন, 'বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।'

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুজ্জামান বলেন, 'সমুদ্র উত্তালের কারণে পর্যটকদের পানিতে না নামতে মাইকিং করা হচ্ছে। সতর্ক সংকেতের পতাকা টাঙানো হয়েছে। পর্যটকদের সচেতনতার ক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় সজাগ রয়েছে।'

তারেকুর/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়