ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রায়গঞ্জে চাল বিতরণ: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৮, ২৫ মার্চ ২০২১  
রায়গঞ্জে চাল বিতরণ: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ 

অভিযুক্ত জিল্লুর রহমান

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে দুঃস্থ ব্যক্তিদের উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচির চাল বিতরণে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক চেয়ারম‌্যানের বিরুদ্ধে।

উপজেলার ৪ নম্বর ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ।

বুধবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ কর্মসূচির চাল বিতরণ করা হয়েছে।

ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভিজিডির অধীনে দুঃস্থ নারীদের জন্য ২০২১-২২ অর্থ বছরে ঘুড়কা ইউনিয়নে ৩৪২টি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব কার্ডধারীদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। 

তবে সেজন্য কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু ঘুড়কা ইউপি কার্যালয়ে কার্ডধারীদের মধ্যে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের চাল বিতরণের সময় ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছ থেকে পরিবহন খরচের কথা বলে ২৪০ টাকা করে নিচ্ছেন। টাকা ছাড়া এক কেজি চালও দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গতকাল বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুরে ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাসুদেবকোল গ্রামের সুখজান, হনুফা বেগম, আজিরন নেছা, আপরোজা খাতুন, ঘুড়কা চর-পাড়া গ্রামের ছালমা খাতুন, লায়লা খাতুন, ও রয়হাটি গ্রামের রাশিদা খাতুন, শেফালী বেগমসহ একাধিক কার্ডধারী ভিজিডি কার্ডের ৩০ কেজি করে চাল সংগ্রহের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে এসেছেন। 

এসময় চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান কার্ডধারী প্রত্যেকের কাছ থেকে একই পরিষদের ইউপি সদস্য জনাব আলীকে দিয়ে ২৪০ টাকা করে দেওয়ার কথা বলেন। কার্ডধারীরা টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাদেরকে চাল দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে কার্ডধারীরা দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করলে চাল বিতরণ করা হয়।

কার্ডধারীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘চেয়ারম্যান চাল দেওয়ার সময় খরচের কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২৪০ টাকা করে নিচ্ছেন। এই টাকাগুলো ইউপি সদস্য জনাব আলীকে দিয়ে সংগ্রহ করছেন। আমাদের এই টাকাগুলো অনেক কষ্টে জোগাড় করতে হয়েছে।’

ঘড়কা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জনাব আলী টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘চাল আনতে পরিবহন খরচ বাবদ বস্তা প্রতি ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এই টাকা নেওয়া অবৈধ। তবে চেয়ারম্যানের অনুমতিতেই টাকা নেওয়া হচ্ছে।’

ঘড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি কারো কাছে টাকা চাইনি। সবাইকে সমানভাবে চাল দেওয়া হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

এ বিষয়ে জানতে রায়গঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাসরিনকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুস সবুর বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ।’

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল আলম বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত নই। কার্ডধারীদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য টাকা নিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রায়গঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অ‌্যাডভোকেট ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন জানান, ভিজিডি চাল বিতরণে টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। যদি টাকা নিয়ে থাকে।
তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, ভিজিডির চাল বিতরণে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর পরেও যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অদিত্য রাসেল/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়