সহায়তা পেয়ে নতুন জামা কিনেছে স্বর্ণা
রাফসান নিঝুম || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: সাহীদুর রহমান
ফেসবুকে ‘বাতিঘর'’ নামে এক গ্রুপে পান ও সিগারেট দোকানদার শিশু স্বর্ণাকে নিয়ে পোস্ট করার পর, সেখানকার এক সদস্য আর্থিক সহায়তা করে স্বর্ণা ও তার পরিবারকে।
রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বসবাস করে শিশু স্বর্ণা ও তার মা শেফালী বেগম। পান, সিগারেটের ভ্রাম্যমাণ দোকানের আয় থেকেই তাদের সংসার চলে।
স্বর্ণার বাবা দ্বিতীয় বিয়ের পর মেয়ে ও স্ত্রীর কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না৷ এমনকি সংসারের কোনো খরচও দেন না।
অভাবের সংসারে বাড়তি বোঝা হিসাবে যোগ হয়েছে স্বামীর জন্য নেওয়া ৪০ হাজার টাকার ঋণ। প্রতিমাসে সুদসহ সেই টাকার একটি অংশ জমা দিতে হয় স্বর্ণার মাকে।
সেইসঙ্গে রয়েছে ৩৫০০ টাকা বাড়িভাড়াসহ যাবতীয় অবস্থা। এমন অবস্থায় করোনার মাঝে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল পরিবারটি।
পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা শেফালী বেগম অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকতে পারে না, তাই সাহায্যের জন্য মেয়ে শিশু স্বর্ণাকে দিয়ে দোকান চালান।
স্বর্ণার সাথে সাহীদুর রহমানের পরিচয় হয় মালিবাগ-রামপুরা এলাকায়। স্বর্ণা ও তার পরিবারের এই অসহায়ত্বের গল্প জানতে পেরে ফেসবুকে ‘বাতিঘর’ গ্রুপে পোস্ট করেন তিনি। সবাই মিলে শিশুর পরিবারকে অর্থ সহায়তা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
সাহীদুর রহমান বলেন, ‘তাদের ভাসমান ব্যবসা হওয়ায় তাদেরকে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করা যাচ্ছিল না। দুইদিন খোঁজাখুঁজির পর তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়।’
‘বাতিঘর’ গ্রুপের এক সদস্য মাহফুজুর রহমান সৌরভের নজরে এই ঘটনা আসলে তিনি অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা করেন৷
ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘‘পান সিগারেটের দোকানদার শিশু স্বর্ণা’ এই শিরোনামে লেখাটি পড়ে এবং শিশু স্বর্ণার মলিন মুখখানি দেখে সেদিন সত্যিই খুব আহত হয়েছিলাম। সাথে সাথে বাতিঘরে যোগাযোগ করি এবং শিশু স্বর্ণাকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নেই।’’
মাহফুজুর রহমান সৌরভ বলেন, ‘সাহায্য পেয়ে স্বর্ণার এই হাসিটুকু আমাকে মুগ্ধ করেছে। জয় হোক মানবতার। পৃথিবীর সব শিশুই ফুলের মতো ফুটে উঠুক।’
অর্থ সহায়তা পেয়ে স্বর্ণা ও তার পরিবার খুব আনন্দিত। এইভাবে কেউ কাউকে সাহায্য করতে পারে, তা ভাবতেও পারেননি শেফালী বেগম। এই টাকা থেকে নিজের জন্য নতুন একটি জামা কিনেছে স্বর্ণা।
বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা সাহীদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই বাচ্চার জন্য আরও কিছু করবো৷ ফান্ড রেডি করছি। এখন থেকে আমরা প্রতিমাসেই এইভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।’
লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, তেজগাঁও।
ঢাকা/মাহি
আরো পড়ুন