ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

স্ত্রীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন রফিক-উল-হক

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২১, ২৪ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৭:২৫, ২৪ অক্টোবর ২০২০
স্ত্রীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন রফিক-উল-হক

রফিক-উল হককে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে

খ্যাতিমান আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে স্ত্রী ফরিদা হকের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে তাকে দাফন করা হয়। ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জুনিয়র ব্যারিস্টার অনিক আর হক রাইজিংবিডিকে এ তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জানাজা হয়। এতে অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিবৃন্দ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুসসহ অনেকে।

জানাজা শেষে তার মরদেহে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এর আগে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতাল ও বায়তুল মোকাররম মসজিদে তার জানাজা হয়।

শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

রফিক-উল হককে গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। রক্তশূন‌্যতাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন নিচ্ছিলেন রফিক-উল হক।

রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার অ‌্যাট ল সম্পন্ন করেন রফিক-উল হক। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন তিনি। আইন পেশায় প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। তিনি বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুই নেত্রী যখন কারাগারে, তখন তাদের জন্য আইনি লড়াই করেন তিনি।

বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার ছিলেন ব‌্যারিস্টার রফিক-উল হক। অনেক সময়েই গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী। ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক-উল হক। কিন্তু তিনি কোনো সম্মানি নেননি। তিনি কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হননি। তবে নানা সময়ে রাজনীতিবিদরা তাকে পাশে পেয়েছেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক সারা জীবনে উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়। 

ঢাকা/মেহেদী/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়