ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বধিরদের সঙ্গে যে আচরণ করা উচিত নয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪১, ১৮ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ০৫:৫৪, ৩০ আগস্ট ২০২০
বধিরদের সঙ্গে যে আচরণ করা উচিত নয়

বধির ব্যক্তিদের মনোজগৎ এবং সংস্কৃতি শ্রবণ শক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিদের থেকে আলাদা। কিন্তু শ্রবণশীল ব্যক্তিদের বধির সংস্কৃতি না জানা থাকায় অনেক সময়ই কোনো কারণ ছাড়াই বা তুচ্ছ কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। বধির ব্যক্তিদের সঙ্গে করা উচিত নয় এমন কিছু আচরণ নিয়েই এ প্রতিবেদন।

বধির সংস্কৃতিকে স্বীকার না করা: অনেক মানুষ বধির সমাজকে নিজেদের মতোই শারীরিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ভাবে। কিন্তু বধির ব্যক্তিদের অনেক বৈশিষ্ট্যই স্বাভাবিক মানুষের থেকে আলাদা। বধির ব্যক্তিদের কাছে তাদের সমাজই তাদের সংস্কৃতি। ‘ড্যাফ ইন আমেরিকা: ভয়েসেজ ফ্রম অ্যা কালচার’ বইয়ের লেখক ক্যারোল প্যাডেন ও টম হাম্পরিজের মতে, ‘বধির ব্যক্তিদের এই সংস্কৃতি বহু প্রজন্ম ধরে অনুষ্ঠান, গল্প এবং প্রতিদিনের সামাজিক ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে।’ তবে ভুলেও এ বিষয়টি কোনো প্রতিবন্ধীর বাবা-মাকে বলবেন না।

বধির লোকদের ‘কানে কালা বা বোবাকালা’ বলবেন না: বধির ব্যক্তিদের ‘কানে কালা’ বলাকে খুবই নেতিবাচক ধরা হয়। কারণ এটা তাদের অপারগতাকে ইঙ্গিত করে। এর মানে হলো তারা মানুষের স্বাভাবিক মান অপেক্ষা হীনতর। একইভাবে, ‘বোবাকালা’ শব্দটিও খুব অপমানজনক। কারণ, বধির ব্যক্তিরা মুখে বলতে পারে না ঠিকই, কিন্তু বাস্তবিকভাবে তাদের স্বরতন্ত্র আছে। তারা ‘বধির’ বা কানে কম ‘শোনে’ এমনটা উল্লেখ করা পছন্দ করে।

শ্রবণ সাহায্যকারী যন্ত্র (ককলিয়ার ইমপ্লান্ট) ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া: তুমি কেন শ্রবণ সাহায্যকারী কিছু ব্যবহার করো না?- এমন কথা বধিরদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। অনেক বধির ব্যক্তির ক্ষেত্রেই এগুলো উপকারী নয় এবং ব্যয়বহুল।

বধির ব্যক্তিদের হাত ধরে থাকা: বধির সমাজের কাছে হাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তারা মূলত হাতের মাধ্যমেই মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে। তাই, একজন বধিরের হাত চেপে ধরা আর কথা বলতে পারে এমন ব্যক্তির মুখ চেপে ধরা একই কথা।

চোখের যোগাযোগ রক্ষা না করা: বধিরদের ভাব আদান-প্রদানে চোখের যোগাযোগ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। চোখে চোখ রেখে কথা না বলাকে তারা কথা বলতে অনিচ্ছুক হিসেবে বিবেচনা করে। এই বিষয়টি অস্বস্তিকর হলেও এটিই বধিরদের সংস্কৃতি। অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলা তাদের কাছে অনেকটা কান বন্ধ রাখার মতোই।

সাংকেতিক কথা বলা ব্যক্তিদের এড়িয়ে যাওয়া: বধিরদের সঙ্গে সাংকেতিক কথোপকথন করা স্বাভাবিক ভদ্রতা। কিন্তু আপনি এটি করতে যদি অস্বস্তিবোধ করেন তাহলে সাংকেতিকভাবে ‘মাফ করবেন’ বলে উঠে যাওয়াই উত্তম। এমন সংকেত দেখাতে আপনার বাম হাত ও করতল প্রসারিত করুন এবং ডান হাতের আঙুল, আঙুলের গাঁটগুলো ঈষৎ বাঁকিয়ে দুই বার ঝাড়া দিন এবং উঠে যান।

বধির ব্যক্তিদের সামনে কানাকানি করবেন না: বধির ব্যক্তিদের সামনে আপনি যদি অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কানাকানি করেন, তাহলে সেটি বধির সংস্কৃতিতে খুবই অভদ্র বলে বিবেচিত হয়।

তাদের সঙ্গে খোলামেলা কথা না বলা: যেহেতু বধির সমাজের শত্রু বলে কিছু নেই, তাই মানুষ তাদের সঙ্গে খোলামেলা ও সহজভাবে তথ্য আদান-প্রদান করে। আপনি কোথায় যাচ্ছেন সেটা অন্যকে না বলে মিটিং কিংবা সামাজিক জমায়েত ত্যাগ করা বধির সমাজে খুবই অশোভনীয়। কেন দেরী হলো কিংবা কেন অগ্রিম যেতে হবে এসবকিছু বধিরদের বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করতে দেখা যায়।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়