ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের ভাগ‌্য নির্ধারণ চলতি সপ্তাহেই 

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ২৯ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ০৬:১০, ৩০ আগস্ট ২০২০
লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের ভাগ‌্য নির্ধারণ চলতি সপ্তাহেই 

লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গত ২৫ আগস্ট চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে চলতি সপ্তাহে  বৈঠকে বসছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।  ওই বৈঠকেই এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকের ভাগ‌্য নির্ধারণ করা হবে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে  ১৭ হাজার ২৪৪ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।  এর মধ্যে ৫  হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।  এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন শুরু হয়েছিল গত ৮ আগস্ট।  শেষ সময় ছিল ২৩ আগস্ট।  এই সময়ের মধ‌্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা পড়েছে ১২ হাজার ১২৭ আবেদনপত্র। জমা-পড়া আবেদনপত্রের মধ্যে ৩ হাজার ৩৯০ হাসপাতালের কাগজপত্র যাচাইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর কিছু কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় ৩ হজাার ৩০৪ আবেদন পেন্ডিং রাখা হয়েছে। নির্ধারিত সব কাগজ দেওয়ার পর অনুমোদন দেওয়া হবে। আর আবেদনই করেনি ৩ হাজার ৪৭৩ হাসপাতাল।

আবেদনের মধ্য থেকে ২ হাজার ৬৭৫ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ৫৯৬ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে রিপোর্ট সম্পন্ন করা হয়েছে। সব নিয়ম-নীতি সম্পন্ন করায় ৪ হাজার ৫১৯ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব ও উপসচিব (জনস্বাস্থ্য-১) ডা. শিব্বির আহমেদ ওসমানি বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে যেসব হাসপাতাল আবেদন করেছে, সেগুলো লাইসেন্স পাবে।  যেগুলো আবেদনই করেননি, সেগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বলেন, ‘যেসব হাসপাতালের লাইসেন্স নেই ও যাদের লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করেনি, তাদের তথ্য আমরা মন্ত্রণালয়ে দিয়েছি।  মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব‌্যবস্থা নেবো। যেসব হাসপাতাল-ক্লিনিকের লাইসেন্স আদৌ নেই, সেগুলো বন্ধ করা হবে। ’   

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক‌্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ‘ সরকারের দেওয়া সব তথ্য পূরণ করবে যেসব হাসপাতাল, সেগুলো অনুমোদন পাবে।  আর প্রক্রিয়া যদি পূরণ করতে না পারে, স্ট্যান্ডার্ড যদি বজায় রাখতে না পারে, সেসব হাসপাতালের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’

ডা. মনিরুজ্জামান ভূইয়া আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের কঠোরতায় ১২ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে।  যারা এখনো আবেদন করতে পারেনি, তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিতে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি।  আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় চেয়েছি। ’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতালগুলোকে নিয়মের মধ্যে না আনতে পারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দক্ষতার অভাব। যেগুলো লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেনি, সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। সেসব হাসপাতালের মালিকদের  জেলে দেওয়া প্রয়োজন। ’

এই বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে, সেগুলো কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে।  যারা সব শর্ত পূরণ করবে, তাদের লাইসেন্স দেওয়া হবে। ’ যেসব হাসপাতাল আবেদন করেনি, সেগুলোর ব‌্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

আসাদ/এনই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়