ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘যৌবনে পা দিয়েছে করোনা’

মাহমুদুল হাসান জাবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৭:৪১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
‘যৌবনে পা দিয়েছে করোনা’

করোনাভাইরাস বিশ্বকে আজও থামিয়ে রেখেছে। কেমন যেন দম বন্ধ হওয়া অবস্থা। লোকমুখে কত কথাই না প্রচলিত এ ভাইরাস নিয়ে।

ইংরেজিতে ‘corona’ মানে ‘crown’। এর অর্থ হচ্ছে মুকুট। এটা এজন্য নামকরণ করা হয়েছে যে, এ ভাইরাসের গায়ে মুকুটের মতো অনেকগুলো অঙ্গাণু রয়েছে। করোনাভাইরাস হচ্ছে একটি ভাইরাস শ্রেণি। এই শ্রেণির ভাইরাস বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে।

এ ভাইরাস বাদুড় বহন করে। বাদুড় থেকে মানুষের মাঝে ছড়ায়। অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন- বাদুড়ে খাওয়া ফল খেতে নাই। এতে কঠিন রোগ হয়। ঠিক তাই। ওরা করোনাভাইরাস বহন করে। কেউ বলেন, এটা চীনের ল্যাবে তৈরি হয়েছে। কথাটি কতটা সত্য তা নিয়েও ভাবার বিষয় আছে। এটা কি হতে পারে যে মানুষ একটা জীব সৃষ্টি করে জীবন দেবে? সেটাকে সর্বোচ্চ ল্যাবে সংগ্রহ করতে পারে তারা। কিন্তু সৃষ্টি করতে পারে না। শুধু বাদুড়েই ছড়ায় নাকি অন্য কোনোভাবেও ছড়াতে পারে, এটা নিয়েও আছে বিতর্ক।

এ ভাইরাস প্রথম হানা দিয়েছিল ২০০২ সালে। তখন থেকেই এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। ২০০২ সালে করোনাভাইরাস যেই রোগটি সৃষ্টি করেছিল তার নাম SARS-CoV-2। এর সম্পূর্ণরূপ হচ্ছে Severe Acute Respiratory Syndrome-Corona Virus - 2002 । ২০০২ সালে হওয়ায় এর শেষে ২ যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এই রোগটি বর্তমান কোভিড-১৯ এর মতো এত ছড়ায়নি তখন। তাই হয়তো মানুষের এত হৈচৈ ছিল না সেসময়। এই রোগটি ছড়ানোর গড় কম ছিল ওই সময়। চীনের গংঢং এলাকা থেকে ছড়িয়েছিল।

২০১২ সালে করোনাভাইরাস আরেকটি রোগ সৃষ্টি করলো। এর নাম ছিল MERS। এর পূর্ণরূপ হলো Middle East Respiratory Syndrome। এটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়েছিল। এটা SARS-CoV-2 এর চেয়েও কম ক্ষতিকর ছিল।

কিন্তু মহামারি হয়ে এলো ২০১৯ সালে। এবার এর নাম হলো COVID-19। Corona Virus Disease- 2019। ২০১৯ সালে ছড়িয়েছে বলে নামের মধ্যে ১৯ দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগী গড়ে দুইজনের চেয়েও বেশি মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। ফলে, এটা জ্যামিতিক হারে প্রচুর ছড়াচ্ছে। ২০০২-এ করোনার উৎপত্তি, আর মহামারি আকারে ছড়িয়েছে ২০-এ। সে হিসেবে মাত্র যৌবনে পা-দিয়েছে করোনা।

অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ দেখা দেওয়ার দুইদিন আগ থেকেই তার থেকে ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। অনেকের ক্ষেত্রে আবার এমনও হতে পারে কোনো লক্ষণই দেখা যাবে না। এমনকি পরীক্ষা করেও তার নেগেটিভ আসতে পারে। তবে, তার থেকে ছড়াবে ঠিকই। এক্ষেত্রে সবারই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

এই রোগের প্রতিষেধক অবশ্যই আছে। প্রয়োজন শুধু গবেষণার। দেশে দেশে তা চলছেও। এক সময় আমরা এর ভ্যাকসিন পাবো। তখন হয়তো এই করোনাভাইরাস কলেরা-ডায়রিয়া রোগের মতো সাধারণ কোনো রোগে পরিণত হবে। অপেক্ষা শুধু ভ্যাকসিনের।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র: https://www.webmd.com/lung/coronavirus-history

ঢাবি/মাহফুজ/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়