ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নাহিদের ‘প্রতিবাদ’

মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০  
নাহিদের ‘প্রতিবাদ’

প্রতিবাদ

প্রতিদিন যাওয়ার পথে
গোলাপ গাছটির সাথে কথা হয়,
ফুটে থাকা গোলাপের সুগন্ধ পেতে
আমাকে লম্বা শ্বাস নিতে দেখে
মুচকি হাসে মেলে থাকা পাপড়িগুলো। 

কিন্তু আজ কেন যেন সবকিছু ব্যতিক্রম।
প্রতিদিনের ন্যায় গোলাপগুলো পাপড়ি মেলেনি,
সুরভী ছড়াবার আকুলতা সত্ত্বেও 
অনেক কষ্টে গুটিয়ে রেখেছে নিজেকে।
সবুজ পাতাগুলো যেন বিষাদ আর যন্ত্রণায়
গাঢ় কালো রঙ ধারণ করেছে।
কাটাগুলো যেন ক্ষিপ্র আর প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত।

গোলাপের সাথে মিতালী করতে আসা 
প্রজাপতিটাকেও দেখছি না আশেপাশে।
রঙ্গিন ডানার ঝলকে গোলাপকে মুগ্ধ করতে না আসলেও
আজ অন্তত সমবেদনা জানাতে আসত সে।
তবে কি সেও ব্যথা পেয়েছে গোলাপের সাথে?

চোখ ঘুরিয়ে চারপাশটায় আবারো খুঁজলাম,
শোভা ছড়ানো সেই রঙ্গিন ডানাকে দেখতে পেলাম না।
হঠাৎই চোখ পড়ল মৃতপ্রায় শুকনো আমগাছটির উপর।
প্রজাপতি তার ডানাগুলোকে ভাজ করে 
গাছটিকে আকড়ে আছে নিশ্চুপে।
এ যেন যাতনা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে বাঁচতে
বিধাতার কাছে মৃত্যু কামনার দৃশ্য!

লক্ষ করলাম আজ আশেপাশে কোনো শব্দ নেই;
সবদিকে সুনসান নীরবতা।
মিষ্টি সুরে শিষ দেওয়া দোয়েল
বা কুহু সুরে ডেকে চলা কোকিল,
সবাই স্তব্ধ করে রেখেছে নিজ কণ্ঠকে।
কলতানে মুখর করার পরিবর্তে আজ যেন
নীরব ভাষায় প্রতিবাদ করছে তারা।

সবাই আড়াল থেকে আড়চোখে দেখছে আমাকে;
সে চোখে শুধুই ঘৃণা, অবজ্ঞা আর প্রতিবাদী চাহনী।
কি হয়েছে তাদের কেন আজ, তাদের এই ব্যতিক্রমী আচরণ?
প্রশ্ন করতে যাচ্ছিলাম, তখনই নীরবতা ভেঙে 
কানে এলো সাইরেনের শব্দ।
পুলিশের একটি গাড়ি এগিয়ে আসছে এদিকেই।
কিছু না ভেবেই নিজেকে লুকালাম।

একটু দূরে ঝোপের পাশে এসে থামল গাড়িটি।
পেছনে আরো কয়েকটি গাড়ি 
তারও পেছনে উৎসুক জনতার ভিড়।
পুলিশ এসে ঝোপ থেকে উদ্ধার করল 
সদ্য শৈশব পেরোনো নিষ্পাপ চেহারার 
এক রক্তাক্ত মেয়ের লাশ!
পেছনের গাড়ি থেকে নেমে আসা 
সংবাদকর্মীরা সম্প্রচার করতে থাকল,
‘ধর্ষণের পর হত্যা করা এক কিশোরীর 
মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।’

কবি: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

ইবি/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়