ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘অনলাইন কেনাকাটায় সচেতন হোন’  

মো. বিপ্লব আলী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৬:৪২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
‘অনলাইন কেনাকাটায় সচেতন হোন’  

বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটায় অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। কেননা, বাসায় বসে খুব সহজে ও কম সময়ে পছন্দমতো পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। 

দোকানে গিয়ে ভিড় জমানো বা রাস্তায় যানজটের মতো বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দেয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। তাই দেশের কর্মজীবী মানুষ এবং শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর কাছে পণ্য কিনাকাটার পছন্দের জায়গা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। 

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্যমতে, বর্তমানে সারাদেশে নিবন্ধনকৃত এক হাজারের বেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এসব সাইটের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ হাজারেরও বেশি পণ্য ডেলিভারি হয়ে থাকে। ই-কমার্সের প্রতি মানুষের এ নির্ভরতার সুযোগ নিয়ে কিছু অসৎ চক্র গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অনলাইনে আকর্ষণীয় বা লোভনীয় বিজ্ঞাপন কিংবা অফার দেখেই হুট করে কিছু মানুষ পণ্য অর্ডার করে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। 

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি) ভিত্তিক গড়ে ওঠা এসব অনলাইন বাজার থেকে পণ্য ক্রয়ের পর দেখা যায়, পণ্যের রঙ, দ্রব্যর সাইজ বা ধরন, বা একটি পণ্যের প্যাকেটের মধ্যে অন্য আর একটি নিম্নমানের পণ্য এবং গুণগত মান যেভাবে বর্ণনা করা থাকে গ্রাহকের নিকটে যখন পণ্যটি পৌঁছে তখন দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে বর্ণনার সঙ্গে মিল থাকে না। আবার পণ্যের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করলেও ত্রুটিপূর্ণ  দ্রব্য পেয়ে থাকে গ্রাহক।  তাই আমাদের অনলাইনে কোনো পণ্য কেনার আগে লক্ষ রাখতে হবে, অনলাইন প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা এবং মালিকের নাম-ঠিকানার অসামঞ্জস্য আছে কি-না। 

অনেকে অনলাইন প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। তাই ওয়েবসাইটে ট্রেড লাইসেন্সের কপি আছে কি-না, তা দেখতে হবে। যদি না থাকে তাহলে ট্রেড লাইসেন্স করা আছে কি-না এবং থাকলে তা নিবন্ধন কত সালে, তা জেনে নিতে হবে। তাছাড়া অনলাইন প্রতিষ্ঠানের কিউআর কোড স্ক্যান করে দেখতে হবে। কোনো বিকাশ নম্বরে মূল্য পরিশোধ করতে বললে নম্বরটি একাধিক নম্বর থেকে ফোন করে যাচাই করে নিতে হবে। অনলাইনে কেনাকাটায় প্রতারণা এড়াতে আমাদের কিছু বিষয়ে সচেতন হতে হবে। 

যথা সম্ভব কম দামে লোভনীয় অফার এড়িয়ে চলতে হবে, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য সরবারাহের ক্ষেত্রে রসিদ ও ক্যাশ অন ডেলিভারি পণ্য গ্রহণ, বিশ্বাসযোগ্য ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে পণ্য কেনা, পণ্য হাতে পাওয়ার পর মূল্য পরিশোধ করা যায় এমন গ্রুপ-পেজ থেকে কেনাকাটা এবং সব ধরনের রশিদ সংরক্ষণ করা, ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন হতে হবে।  বর্তমানে  করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে ও বিদেশের অধিকাংশ মানুষ বাসায় অবস্থান করছেন। এ প্রেক্ষাপটে অনলাইন কেনাকাটায় চাহিদা বেড়েছে সে সঙ্গে প্রতারণার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গ্রাহকদের নিকট সঠিক পণ্য পৌঁছানো ও ই-কমার্স সাইটকে সর্বসাধারণের নিকটে প্রসারিত করার জন্য ‘অনলাইন প্রতারক’ চক্রকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গ্রাহকের নিকট সঠিক পণ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে এবং ই-কমার্সের সুবিধা সাধারণ মানুষ পাবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

রাবি/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়