ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ক্ষত শুকাতে যা খাবেন

দেহঘড়ি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৮, ১৩ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১০:২০, ১৩ অক্টোবর ২০২০
ক্ষত শুকাতে যা খাবেন

আপনার অস্ত্রোপচার বা সার্জারি হয়ে থাকলে কোন খাবার খাচ্ছেন তা নিরাময়ের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি কি খাচ্ছেন তা ক্ষত শুকানোকে দ্রুত বা বিলম্বিত করতে পারে। এসময় সঠিক খাবার খেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য ও উচ্চ রক্ত শর্করার মতো জটিলতা প্রতিরোধ করতে পারবেন। আপনার ডায়েটে সেসব খাবার রাখতে হবে যা ক্ষতস্থানকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে প্রোটিনের প্রয়োজনীয় বিল্ডিং ব্লক সরবরাহ করবে। সার্জারির পর খাওয়া উচিত এমনকিছু খাবার নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

বেরি: বেরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ড্যামেজ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার সার্জারির পর ডায়েটে সংযোজনের জন্য আদর্শ খাবার। কেবল বেরি নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অন্যান্য ফলও খেতে পারেন। ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি, রাসবেরি, আঙুর ও ডালিমে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়া বেরিতে প্রচুর ভিটামিন সি পাবেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি কোলাজেন ও সফট টিস্যু মেরামতে সহায়ক। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে ওঠে।

সবজি: হিলিং ডায়েট তথা নিরাময়ের খাদ্যতালিকায় সবজিকে অবশ্যই রাখতে হবে। সবজির ভিটামিন ও মিনারেল ক্ষতস্থান শুকাতে সহায়তা করে। আপনার হিলিং ডায়েটে সংযোজনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সবজি হলো: গাজর, বেল পিপার বা ক্যাপসিকাম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, মিষ্টি আলু ও গোল আলু। এসব খাবার হলো কার্বোহাইড্রেটের স্বাস্থ্যকর উৎস, যা সার্জারি করে হাসপাতাল থেকে ঘরে আসার পর যে ক্লান্তি অনুভূত হয় তা কাটিয়ে ওঠতে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট মস্তিষ্ককে শক্তি যোগায় ও মাংসপেশির ভাঙন থামায়। এছাড়া সবজি থেকে শরীর প্রচুর ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ফাইবার পাবে। সবজির ফাইবার সার্জারি-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা কমাবে। সার্জারির পর ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার ও নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।

চর্বি: চর্বির কথা শুনলেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা মনে রাখা ভালো যে স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের বন্ধু। বিশেষ করে সার্জারির পর স্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়ার গুরুত্ব আরো বেশি। স্বাস্থ্যকর চর্বি ফল ও শাকসবজির পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে। এসব খাবার খেলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হবে ও সংক্রমণের সম্ভাবনা কমবে। স্বাস্থ্যকর চর্বি শক্তির দীর্ঘমেয়াদি উৎস হিসেবেও কাজ করে। স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে এমন খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। এটাও ক্ষত নিরাময় দ্রুত করে ও সার্জারির দাগ কমায়। অলিভ অয়েল, কোকোনাট অয়েল, বাদাম ও বীজে স্বাস্থ্যকর চর্বি পাবেন।

মুরগির মাংস: এমনিতেই সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সার্জারির পর ডায়েটে প্রোটিন রাখার গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। এসময় উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রন খেতে হবে। সার্জারির সময় মাংসপেশি ড্যামেজ হতে পারে। এখন এসব মাংসপেশি মেরামতের প্রয়োজন রয়েছে। প্রোটিনের অ্যামাইনো অ্যাসিড নতুন টিস্যু সৃষ্টি ও ক্ষত নিরাময় দ্রুত করে মাংসপেশির ড্যামেজ মেরামতে সাহায্য করে। আয়রন নতুন রক্তকণিকা তৈরি করে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে। এসময় মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, বিনস, মসুর ডাল, ডিম ও বাদাম খেয়ে শরীরে প্রোটিন সরবরাহ করতে পারেন।

ডিম: প্রকৃতি খোলসে আবৃত করে আমাদেরকে একটি আদর্শ নিরাময়কারী খাবার উপহার দিয়েছে। সেটা হলো আমাদের অতি পরিচিত ডিম। ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড ও রিবোফ্লাভিন রয়েছে।এসব পুষ্টি সার্জারির পর রোগীকে দ্রুত নিরাময় দিতে কাজ করে।

(আগামী পর্বে সমাপ্য)

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়