ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ব্যবসায় স্বপ্নের সমান বড় হতে চান বৃষ্টি 

সাজেদুর আবেদীন শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ২৫ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৫:৩০, ২৫ নভেম্বর ২০২০
ব্যবসায় স্বপ্নের সমান বড় হতে চান বৃষ্টি 

জামদানির শহর নারায়ণগঞ্জের মেয়ে বাড়িয়া জাহান বৃষ্টি। বড় হয়ে বিয়েও হয় একই জেলাধীন সোনারগাঁওয়ে। ছোটবেলা থেকেই তিনি দেখে আসছেন জামদানির জীবন বৃত্তান্ত। তাই তার সঙ্গে এই ঐতিহ্যবাহী পণ্যটির আবেগ ও ভালোবাসা জড়িয়ে আছে। শাড়ি নিয়ে বুঝতে শেখার পর থেকেই বৃষ্টি মনের কোণে ঠাঁই দিয়েছিলেন জামদানিকে।

তিনি ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে স্থাপত্য বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করেছেন। বিএসসি করেছেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পড়াশোনা চলাকালীন চাকরি করেছেন দেশে সনামধন্য দুটি প্রতিষ্ঠানে।

কিন্তু বিয়ের পর সংসারের মায়ায় চাকরি আর করা হয়নি বৃষ্টির। তবে নিজে কিছু করার ইচ্ছে তার অনেক আগে থেকেই ছিল। বান্ধবীরা ভালো চাকরি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন, ‘আমি ভালো ব্যবসায়ী হবো।’ 

মনে মনে নিজের জন্য কিছু করার একটা সঠিক প্ল্যাটফর্ম খুঁজছিলেন বৃষ্টি। তারপর দেখা মেলে ফেসবুক ভিত্তিক ই-কমার্স গ্রুপ ‘উই’। বৃষ্টি সেখানে যুক্ত হন। কিছু দিন ‘উই’তে সবার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারেন এটাই তার কাঙ্ক্ষিত সেই প্ল্যাটফর্ম, যেখানে থেকে সে নিজের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন পুরণ করতে পারবেন। চলতি বছরের ২৯ আগস্ট থেকে নারায়ণগঞ্জের জামদানি পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। 

বৃষ্টি বলেন, ‘‘গত ৩ মাসে শুধু উইতে নিয়মিত একটিভ থেকে পরিচিতি বৃদ্ধি করার কারণে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী পেয়েছি। আমার কাজে প্রথম থেকেই পারিবারিক সাপোর্ট কম পেয়েছি। কারণ, আমার দুই বছরের ছোট্ট বাচ্চা রেখে কাজ করা সম্ভব কি না তা আমার পরিবারের অনেকেই ভাবতে পারতেন না। আমার সন্তান আমার দুর্বলতা নয়। সে আমার কাজের সবচেয়ে বড় অনপ্রেরণা। 

আব্বু সরকারি চাকরি করেন, তাই তিনি ব্যবসা বোঝেন না। তারপরও আমার প্রথম ইনভেস্ট আব্বুই করেছেন। আমার বাবার বাড়ির সবাই খুব সাপোর্ট করেছেন আমাকে। আমার স্বামী আমার পাশে প্রথম থেকেই আছেন। যেকোনো কাজে সর্বপ্রথম তিনিই এগিয়ে আসেন।’’

জামদানি পণ্য নিয়ে কাজ করার সুবাদে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের তাঁতিদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে বৃষ্টির। এখনও সেসব তাঁতিরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বৃষ্টির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তাঁতিদের পরিশ্রম সফল করে তাদের জামদানি শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে উৎসাহিত করা। 

বৃষ্টি আরও বলেন, ‘‘বলা চলে আমি প্রায় শূন্য থেকে শুরু করেছি। গত ৩ মাসে জামদানি পণ্য বিক্রি করেছি দুই লক্ষ টাকার। প্রি-বুকিংসহ হিসাব করলে সংখ্যাটা হবে ৩ লাখ টাকা। সবটুকুই আমি বলবো ‘উই’র অবদান। ‘উই’ আমাকে আমার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিয়েছে। আমার জামদানি পণ্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে। এ ধারা বজায় রেখে পৃথিবীর প্রতিটি দেশে NUH'S Gallery (বৃষ্টির ব্যবসায়ীক ফেসবুক পেজ) থেকে নারায়ণগঞ্জের জামদানি পণ্য ছড়িয়ে পড়ুক এটাই আমার সপ্ন।’’ 

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। বৃষ্টিও ঠিক ততটাই বড় হতে চায়, যতটা বড় স্বপ্ন দেখেন তিনি।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়