ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে ‘বিদেশযাত্রা’র যাত্রা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৮, ২৬ নভেম্বর ২০২০  
অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে ‘বিদেশযাত্রা’র যাত্রা

অভিবাসনপ্রত্যাশী, বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসী, বিদেশফেরত অভিবাসী এবং তাদের পরিবারের জন্য নিরাপদ অভিবাসন, টেকসই পুনরেকত্রীকরণ এবং রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনাসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য সেবা দিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। এর নাম ‘বিদেশযাত্রা’।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) এক অনলাইন অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন এ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরিসহ অভিবাসনখাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।    

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত প্রত্যাশা প্রকল্পের আওতায় প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়।

অভিবাসীরা বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরত্বপূর্ণ বিনিয়োগের একটি। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে অভিবাসীরা বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৮ দশমিক ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ এক কোটি ৩০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক বিদেশে পাঠিয়েছে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের অভিবাসনখাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘসময় ধরে কাজ করছে।

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৫ লাখের বেশি অভিবাসী শ্রমিক বিদেশ যান। নিয়মিত, বিধিসম্মত এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অভিবাসীবান্ধব তথ্য সেবা দিতে আইওএম তৈরি করেছে ‘বিদেশযাত্রা’ নামক একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইট (https://bdeshjaatra.com/) প্ল‌্যাটফর্ম। প্ল্যাটফর্মটি তৈরিতে কারিগরি সহায়তা করেছে বিডিজবস।  

এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, ‘অভিবাসন ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ সরকারের একটি অগ্রাধিকার খাত। অভিবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা ও শোভন কর্ম অবস্থা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে চলেছি। জাতীয় উন্নয়নে অভিবাসী কর্মীদের অবদান আমাদের জন্য মূল্যবান। দেশের প্রত্যেক উপজেলা থেকে প্রতি বছর এক হাজার কর্মীকে বিদেশ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় শোষণ, ঋণ সংক্রান্ত জটিলতা, বৈষম্য ও নির্যাতন প্রতিরোধে নিরাপদ অভিবাসন, পুনরেকত্রীকরণ এবং রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনা বিষয়ক তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যনির্ভর সিদ্ধান্ত নিতে অভিবাসীদের সহায়তা করতে ‘বিদেশযাত্রা’ একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।’

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত র‌্যানচা টিয়ারিঙ্ক তার বার্তায় বলেন, ‘যথার্থ তথ্যনির্ভর সিদ্ধান্তই সঠিক সিদ্ধান্ত। যারা জেনেশুনে বিদেশ যান তারা অনেক বেশি নিরাপদে থাকেন। নিরাপদ অভিবাসন ও টেকসই পুনরেকত্রীকরণ নিশ্চিতে এবং উন্নত অভিবাসন ব্যবস্থাপনা সহায়তায় এই প্ল্যাটফর্মটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত প্রত্যাশা প্রকল্পের অন্যতম উদ্যোগ। আমি বিশ্বাস করি, এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তথ্যের ঘাটতি কমিয়ে নিরাপদ, বিধিসম্মত এবং নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিতে সহায়তা করবে।’

আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, ‘করোনা সংকট সারাবিশ্বের জনগোষ্ঠীর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এই মহামারি থেকে আমরা শিখেছি যে, অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে হালনাগাদ সঠিক তথ্য অভিবাসীদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশযাত্রা’র উদ্দেশ্য হচ্ছে অভিবাসী কর্মীরা যেন তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হন তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি, গন্তব্য দেশে অভিবাসীরা কোথায় সাহায্য ও সেবা পেতে পারেন, নিজ দেশে ফেরত আসার পর কী ধরনের সহযোগিতা তারা পেতে পারেন,  উন্নত রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সহযোগিতা কোথায় পেতে পারেন- এসব বিষয়ে তারা যেন অবহিত থাকেন তা নিশ্চিত করা এই প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশ্য।’

প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত প্রত্যাশা প্রকল্পের আওতায়। বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ব্র্যাকের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আইওএম বাংলাদেশ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

ঢাকা/হাসান/জেডআর

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়