ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মল কালো হওয়ার ৮ কারণ

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ৮ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০৯:২৭, ৮ জানুয়ারি ২০২১
মল কালো হওয়ার ৮ কারণ

টয়লেটে কালো মল দেখে অনেকেই দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে যান। তারা ভাবেন যে ক্যানসার হয়েছে অথবা এটা হয়তো অন্যকোনো মারাত্মক রোগের লক্ষণ। কালো মল দেখে ভয়ে মুষড়ে পড়ার প্রধান কারণ হলো মিডিয়া। প্রায়সময় মিডিয়াতে কালো মলকে ভীতিকর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, বিশেষ করে এটাকে ক্যানসারের লক্ষণ বলা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা আশ্বস্ত করেছেন, কিছু সাধারণ কারণেও মলের রঙ কালো হতে পারে। এখানে ক্যানসার ছাড়াও মল কালো হওয়ার ৯টি কারণ দেয়া হলো।

* ডার্ক চকলেট: মল কালো হওয়ার সবচেয়ে নিরীহ কারণ হলো কালো রঙের খাবার খাওয়া। ডার্ক চকলেট/ব্ল্যাক লিকোরাইসের মতো কালো চকলেট অথবা অ্যাক্টিভেটেড চারকোল খেলে মল স্বাভাবিক রঙ হারাতে পারে। ব্লুবেরি, বিটস ও আঙুরের রস খেলেও মল কালো হয়ে যেতে পারে। কিন্তু খাবারের পক্ষে মলকে আলকাতরার মতো কালো করা সম্ভব নয়। এটা হলো মেলেনা রোগের লক্ষণ।

* পেপটো-বিসমল: পেপটো-বিসমল ওষুধ সেবন করলে এর সক্রিয় উপাদান বিসমুথ মলকে কালো করতে পারে, বলেন টেক্সাসের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট হ্যারি থমাস। কিন্তু মলকে আলকাতরার মতো কালো করার ক্ষমতা বিসমুথেরও নেই।

* আয়রন সাপ্লিমেন্ট: কালো মলের আরেকটি সম্পূর্ণ নির্দোষ কারণ হলো আয়রন সাপ্লিমেন্ট সেবন। মিনেসোটার ফ্যামিলি প্র্যাকটিশনার ক্রিস্টিন ট্রেক্সনার বলেন, আয়রন খেলে মলের রঙ কালো হয়, কারণ সব আয়রন শরীরে শোষণ হয় না। যেসব আয়রন শোষিত হয় না তা অন্ত্রে রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এটা মলকে কালো করে ফেলে। আয়রন সাপ্লিমেন্ট সেবনে মল কালো হলেও তা আলকাতরার মতো নয়।

* রক্ত খেয়ে ফেলা: ডা. ট্রেক্সলারের মতে, রক্তাক্ত নাকের রক্ত খেয়ে ফেললেও মলের রঙ কালো হতে পারে। কেবল নাক নয়, মুখ বা গলার ইনজুরিতে রক্ত বের হয়ে তা পাকস্থলিতে চলে গেলেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কখনো কখনো বমি হলে খাদ্যনালীর কোথাও ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এটাও মলকে কালো করতে পারে।

* রক্ত পাতলাকারী ওষুধ: ব্লাড থিনার তথা রক্ত পাতলাকারী ওষুধ সেবন করলেও মলের রঙ কালো হতে পারে, বলেন ক্যালিফোর্নিয়ার প্যানক্রিয়েকোবাইলিয়ারি স্পেশালিস্ট, হেপাটোলজিস্ট ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট কুমার দেসাই। এটা একটি তুলনামূলক নিরীহ কারণ হলেও চিকিৎসককে জানানো উচিত, কারণ ব্লাড থিনারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে আপার জিআই ট্র্যাক্ট (যেমন- খাদ্যনালী, পাকস্থলি ও ডিওডেনাম) থেকে রক্তক্ষরণ হয় বলে মল স্বাভাবিক রঙ হারিয়ে ফেলে। অ্যাসপিরিন ও অন্যান্য নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি মেডিকেশনও (এনএসএআইডি) জিআই ট্র্যাক্ট থেকে রক্তক্ষরণের মাধ্যমে মলকে কালো করতে পারে।

* জিআই ট্র্যাক্টে পলিপ বা টিউমার: জিআই ট্র্যাক্টে যেকোনো অস্বাভাবিক বৃদ্ধি (হোক সেটা ক্যানসারমুক্ত অথবা ক্যানসারযুক্ত) ভেতরের স্তরকে দুর্বল করে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। জিআই ট্র্যাক্টের ভেতরের স্তরে রক্তক্ষরণের একটি প্রচলিত লক্ষণ হলো, মল কালো হয়ে যাওয়া।

* পেপটিক আলসার: পেপটিক আলসার থেকে রক্ত বের হয়ে মলকে কালো করে দিতে পারে। পেপটিক আলসারের অন্যান্য উপসর্গ আছে কিনা খেয়াল করুন, যেমন- বদহজম, পেটে জ্বালাপোড়া ও কফি গুঁড়ার মতো বমি।

* ইসোফাজিয়াল ভেরিসেস: ইসোফাজিয়াল ভেরিসেস হলো ভেরিকোস ভেইনসের মতো, কিন্তু এটা হয় খাদ্যনালিতে। এটা আপার জিআই ট্র্যাক্ট থেকে রক্ত ঝরিয়ে মলকে কালো করে তোলে। সাধারণত ইসোফাজিয়াল ভেরিসেসের সঙ্গে লিভারের রোগ সিরোসিসের সম্পর্ক রয়েছে। কালো মল বিরলক্ষেত্রে ইসোফাজিয়াল ভেরিসেসের প্রথম লক্ষণ হয়ে থাকে। লিভার রোগ ও ইসোফাজিয়াল ভেরিসেসের অন্যান্য উপসর্গ হলো জন্ডিস (ত্বক ও চোখ লাল হওয়া), রক্তবমি, মাথাঘোরানো ও পেট ফুলে যাওয়া।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়