চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির বাংলাদেশ প্রস্তুত

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কিংবা তার পরবর্তি সময়ে ডিজিটাল সংযুক্তির জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে যেসব ত্রুটি রয়েছে তা চলতি বছরের মধ্যে দূর হয়ে যাবে। 

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সেমিনারে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

মোস্তাফা জব্বার বলেন, পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ ৫-জি চালুর বিষয়টি চিন্তাও করেনি কিন্তু বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ৫-জি চালু করতে যাচ্ছে। ২৩ সালে আসছে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। ২১ সালেই হাওর-বিল-চর পার্বত্য অঞ্চল ক্যাবল ও স্যাটেলাইট সংযোগের আওতায় আসছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগন্ত্রী বলেন, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি কেবল চতুর্থ শিল্প বিপ্লবেই সীমিত নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মাঝে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে যে রূপান্তর ঘটানো দরকার তা নিহিত রয়েছে।

মোস্তাফা জব্বার বলেন,৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউপিই্উয়ের সদস্য পদ অর্জন এবং ৭৫ এর ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা ডিজিটালাইজেশনের বীজ বপণ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার, অনলাইন ইন্টারনেট চালু করে সাধারণের নাগালে মোবাইল পৌঁছে দিতে মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করে চারটি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছেন। ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে ডিজিটাইজেশনের রোপিত বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেন।

মন্ত্রী বলেন, মহামারিতে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ ঘরে বসে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা নিয়েছেন। গ্রামের প্রথম শ্রেণির শিশুটিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ডাকঘরকে ডিডিটাল ডাকঘরে রূপান্তর করার কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আমরা ইতোমধ্যে সেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। আগামী ২৬ মার্চ ২৪ হাজার ম্যাগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সক্ষম হব। 

তিনি বিদ্যুতের সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগের তার নেওয়ার ব্যবস্থার কথাও জানান।

তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য অপরিহার্য উল্লেখ করে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ জনসম্পদ জরুরি। এই লক্ষ্যে ৩৯টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম মূল প্রবন্ধে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব ও প্রেক্ষাপট সবিস্তারে তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও আইইবির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, আইইবির সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) প্রকৌশলী মো. নূরুজ্জামান বক্তৃতা করেন।