ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ২ কোটি টাকা দাবি করে তারা’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১১, ৯ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ২২:২৩, ৯ এপ্রিল ২০২১
‘ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ২ কোটি টাকা দাবি করে তারা’

প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে তামজিদ নামের এক ব‌্যক্তিকে অপহরণের পর ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে তার পরিবারের কাছে ২ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানায় শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সকালে মামলা করেছেন তামজিদের বোন রাইয়ানা হোসেন। 

এ মামলায় র‌্যাবের চার সদস‌্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই করা হচ্ছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তামজিদ হোসেন ৮ এপ্রিল সকাল ৯টায় উত্তরায় যাওয়ার কথা বলে তার মীরবাগের বাসা থেকে বের হন। ওই দিন আনুমানিক দুপুর ১২টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি রাইয়ানাকে ফোন করে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জানান, তার ভাই তামজিদ র‌্যাবের হেফাজতে আছেন। এ বিষয়ে থানা পুলিশ বা ডিবি পুলিশকে জানালে তার ভাইকে মেরে ফেলা হবে। এ কথা বলে ফোন কেটে দেন অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি।

রাইয়ানা হোসেন এজাহারে বলেন, ‘আমি পরে অনেকবার ফোন করলেও ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি তা রিসিভ করেননি। পরে আনুমানিক দুপুর দেড়টায় ফোন রিসিভ করেন ওই ব্যক্তি। তিনি জানান, আমার ভাইকে র‌্যাবের সিনিয়র অফিসাররা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তার নামে অস্ত্র ও মাদক মামলা হবে।’

র‌্যাবের কোন অফিসে, কোন সিনিয়র অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করছেন? জানতে চাইলে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি রাইয়ানাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হতে পারে। যদি আপনার ভাইকে বাঁচাতে চান, তাহলে ২ কোটি টাকা রেডি করেন। এর কিছুক্ষণ পর র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া সেই ব্যক্তি মোবাইল ফোনে আমার ভাইকে মারধরের শব্দ শোনান। আমার ভাইকে মোবাইল ফোন দিলে, সে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, তাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে বেদম মারধর করছে। আমার ভাই বাঁচার আকুতি জানায়। পরবর্তী সময়ে ওই নম্বর থেকে আরও অজ্ঞাত দুই-তিনজন ফোন করে টাকা জোগাড়় করতে পারছি কি না তা জানতে চান। আমি তাদেরক বলি, আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা কোথা থেকে পাব? পরে ওই ব্যক্তি ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমাদের কাছে কোনো টাকা নেই জানালে, ওই ব্যক্তি নগদ ১২ লাখ টাকা নিয়ে রাজধানীর একটি অভিজাত মার্কেটে যেতে বলেন।’

রাইয়ানা এজাহারে আরও বলেন, ‘আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমার ভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে কল করে তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। আমার ভাই তখন দাবিকৃত টাকা দিয়ে দিতে বলে। আমরা তখন তার (তামজিদ) অবস্থান জানতে চাইলে সে জানায়, তার হাত-পা ও চোখ বাঁধা। সে কোথায় আছে বলতে পারবে না। টাকা নিয়ে ওই অভিজাত র্মার্কেটে যেতে বলে।’

এ বিষয়ে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‌‘পুলিশ চারজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তারা যেসব বাহিনী থেকে এসেছে, সেখানে হস্তান্তর করা হবে। অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে এ ধরনের অপরাধ করে। তেমনটি হয়েছে কি না, তাও তদন্ত করছি। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণ হলে শুধু বিভাগীয় নয়, প্রচলিত আইনেও তাদের বিচার হবে।’

ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়