ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অন্যের সৃষ্টি নিজের নামে চালানো, কপিরাইট আইন কী বলে?

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ৫ মে ২০২১   আপডেট: ১৮:৫৮, ৫ মে ২০২১
অন্যের সৃষ্টি নিজের নামে চালানো, কপিরাইট আইন কী বলে?

গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, সিনেমাসহ মৌলিক যে কোনো শিল্পকর্মের মালিকানা এক বা একাধিক ব্যক্তি হতে পারে।  সেসব শিল্পকর্মের মালিকানা সনদ, প্রমাণ সাপেক্ষে দেওয়া হয় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, আগারগাঁও থেকে। এজন্য মৌলিক শিল্পকর্মের মালিককে লিখিতভাবে আবেদন করতে হয়।  সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই করে মালিকানা সনদ দেওয়া হয়। একবার সে সনদ কেউ পেলে, তার লিখিত বা মৌখিক অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ সেই মৌলিক সৃষ্টি (গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক বা সিনেমার কাহিনি) অন্য কোথায়ও, অন্য নামে প্রদর্শন, নির্মাণ বা ব্যবহার করতে পারেন না বলে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস-এর রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস্ জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘কপিরাইট আইনে কারো মৌলিক সৃষ্টির মালিকানার সনদ থাকলে, সেই সৃষ্টি অন্য কেউ অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করলে বা প্রচার করলে তার বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ধারা মতে, যথাযোগ্য প্রমাণ-দলিলসহ প্রাথমিক প্রতিকার চেয়ে কপিরাইট টাস্কফোর্স বরাবর অভিযোগ করা যাবে। এই টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক হচ্ছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্তি সচিব’।

তিনি আরও বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে কপিরাইট টাস্কফোর্স দুইপক্ষকে শুনানির জন্য ডাকবেন। এরপর উভয়ের কথা শুনে, প্রমাণাদি দেখে দুইপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন শর্তে সমঝোতা করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সমঝোতা মানলে দুইপক্ষকেই লিখিতভাবে ভবিষ্যতে কোনোরুপ মামলা-মোকদ্দমা বা অন্য কোনো ঝামেলা করবেন না-মর্মে অঙ্গীকারনামা লিখে দিতে হয়। তাহলেই কপিরাইট টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ঘটনার নিষ্পত্তি হয়।’

কিন্তু কেউ অন্য কারো মৌলিক শিল্প অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রচার করলে বা সেটা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হলে, মূল মালিকের নাম প্রচার না করলে বা তাকে সেই প্রাপ্ত অর্থের অংশ না দিলে, মূল শিল্পী কোনোরুপ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবেন কি না?

জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘টাস্কফোর্সের মাধ্যমে মীমাংশা না হলে অবশ্যই নিয়মিত আদালতে মামলা করা যাবে। এরকম অনেকগুলো মামলা অতীতে হয়েছেও। যদিও বেশিরভাগই আমাদের এখানে মীমাংশা হয়ে যায়।  তবে সম্প্রতি এরকম বিষয় নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত মামলাটি হয়েছে- মাসুদ রানা উপন্যাসের লেখকের নামের স্বীকৃতি নিয়ে।  যা এখন উচ্চতর আদালতে বিচারাধীন।’

এরকম মামলায় যদি দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হয়, তাহলে টাস্কফোর্স বা আদালতে কী শাস্তি দিতে পারেন?

এই প্রশ্নের উত্তরে রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস্ জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘অন্যের মৌলিক সৃষ্টি নিজের নামে কেউ প্রচার করলে বা নিজের বলে দাবি করলে; সেটা পরবর্তী সময়ে মিথ্যে প্রমাণিত হলে- বাংলাদেশ কপি রাইটস্ বিধান লঙ্ঘনের কারণে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করতে পারে কপিরাইট টাস্কফোর্স।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের রায়ে দোষী ব্যক্তির অর্থদণ্ডের পাশাপাশি ৬ মাস থেকে ৪ বছরের জেলও হতে পারে। অতীতে অন্যের সৃষ্টির মিথ্যে মালিকানা দাবিদার অনেকের জেল ও জরিমানা হয়েছে।’

মেসবাহ/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়