ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মাদক মামলা: নাসির ও অমি ৭ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ১৫ জুন ২০২১   আপডেট: ২০:২৬, ১৫ জুন ২০২১

চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ও তুহিন সিদ্দিকী অমির ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এছাড়া তিন নারী লিপি আক্তার, সুমি আক্তার ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধার ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বিকেল ৩টার কিছু আগে এই ৫ আসামিকে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। তাদের ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়। ৪টা ১৭ মিনিটে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিএমপির গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নি.) উদয় কুমার মন্ডল আসামিদের ১০ দিন করে যে রিমান্ড আবেদন করেছিলেন তার ওপর শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবুসহ কয়েকজন ১০ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।

আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘মামলাটি মাদকদ্রব্য আইনের।  ঘটনার সূত্রপাত নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা থেকে। এ মামলায় পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন। ডিবি পুলিশ অভিযান চালায় আসামিদের গ্রেপ্তারে। তারা খোঁজ পায় আসামিরা উত্তরার একটি বাসায় আছে। সেখান থেকে নাসির উদ্দিনসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এরা বাড়ির মালিক না।  সেখানে গিয়ে তারা আমোদ ফূর্তি করে। যা ঘৃণিত কাজ। সেখান থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এ ধরনের ভদ্র মুখোশধারী লোকজন সমাজকে ধ্বংষ করে দিচ্ছে। বিভিন্ন লোকজনদের প্রলোভন, অভিনয় করে নিকৃষ্ট কাজে সম্পৃক্ত করছে। আরও কারা জড়িত, কারা মাদক সরবরাহ করে তাদের চিহ্নিত করতে রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

নাসির উদ্দিনের পক্ষে ঢাকা বারের সভাপতি আব্দুল বাতেন, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোহাম্মদ হযরত আলী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

তারা বলেন, ‘ঘটনা ৮ জুনের।  মামলা হয়েছে ৬ দিন পর। সেই মামলা থেকে এই মামলা এসেছে। দেখা যাচ্ছে মাদক উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে মামলায়।  কিন্তু নাসির উদ্দিন ওই বাসায় ছিলেন না। তাকে অন্য জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে এ বাসায় নিয়ে এসেছে।  ওই বাসা কার তা তার দেখার বিষয় না। পরীমনির ওই ঘটনা না ঘটলে খালি বোতল, সোডার বোতল উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হতো না।’

তারা বলেন, ‘নাসির উদ্দিনকে যে মামলায় গ্রেপ্তার করতে গেছেন, সেই মামলায় তো তাকে গ্রেপ্তার দেখাননি। বাসা তার না। তার শরীর থেকেও কিছু পাননি। বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আসলে বিষয় কিছু না।  কিছুই পায়নি।  ২৪ ঘণ্টা আগে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিছুই পায়নি।’

তারা আরও বলেন, ‘তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি, ব্যবসায়ী। প্রেক্ষাপটের আলোকে এখানে আসতে হয়েছে।  লাখ লাখ টাকা তিনি সরকারকে ট্যাক্স দেন। আর উনি গেছেন এসব মাদক খাটের নীচে রাখতে।  তিনি ভিকটিমাইজ।  সমাজের এলিট পার্সন।  যেভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এতে তার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।  তিনি অসুস্থও। যা উদ্ধার করার তা হয়েছে।  রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই।  প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।’

তিন নারী আসামির পক্ষে মুহাম্মদ জুয়েল রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন,‘এদের অন্য জায়গা থেকে ধরে এনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা নির্দোষ। ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানে না। রিমান্ড বাতিল করে তাদের জামিনের প্রার্থনা করছি।’ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে তাদের রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ১ হাজার ইয়াবা বড়ি, বিদেশি মদসহ তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আসামিদের গ্রেপ্তারে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান।

ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির, অমিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সোমবার সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। এর আগে পরীমনি রোববার রাতে বনানীর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের জানান, গত ৮ জুন রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমির সঙ্গে বাইরে বের হন। বন্ধুটি তাদের নিয়ে যান আশুলিয়ার একটি ক্লাবে। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজনের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। ওই ব্যক্তিদেরই একজন হঠাৎ জোর করে তাঁর মুখে পানীয়র গ্লাস চেপে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় মারধর করা হয় পরীমনির সঙ্গে থাকা জিমিকেও।

মামুন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়