ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সিলেটে ৩ হত্যা: ২ ক্লু নিয়ে কাজ করছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ১৬ জুন ২০২১   আপডেট: ১৭:২৪, ১৬ জুন ২০২১
সিলেটে ৩ হত্যা: ২ ক্লু নিয়ে কাজ করছে পুলিশ

সিলেটের গোয়াইনঘাটে মা ও দুই শিশু হত্যার ঘটনায় দুই ক্লু নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাড়ির ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুন) সকালে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর বিন্নাকান্দি গ্রামে নিজের বসত ঘর থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় আহত অবস্থায় গৃহকর্তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পুলিশ বলছে, তিন জনের মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তারা কাজ করছেন। প্রাথমিকভাবে দুটি ক্লু পেয়েছে পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই কাজ করছেন তারা। দ্রুত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলেও আশা তাদের।

নিহতরা হলেন- বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগম (৩০), ছেলে মিজান আহমদ (৮) ও মেয়ে আনেসা (৪)। আহত হিফজুর রহমান পেশায় পান ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহত আলেয়া অন্তঃসত্বা ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে সিলেটের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন, পিবিআইর বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) আশিশুর রহমান, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহমান, গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ প্রবাস কুমার সিংহসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

হিফজুরের মামা ও কয়েকজন স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে হিফজুরের শ্বশুর এবং মামির বক্তব্যে দুটি ভিন্ন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সেই বক্তব্য দুটিকে ক্লু হিসেবে ধরে রহস্য উদঘাটনের কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ দুটি মোটিভ সামনে নিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে জমি সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিরোধ। হিফজুর পুলিশের পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনিই একমাত্র জীবিত রযেছেন। এজন্য তার বক্তব্য প্রয়োজন। তার জ্ঞান ফেরেনি। জ্ঞান ফেরার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

‘হামলাকারীরা শিশু দুটি গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে। শিশুদের মা আলেয়া বেগমের বুক, পিঠসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সঙ্গে হিফজুরের শরীরের একাধিক স্থানেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।”

সিলেটের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশের একাধিক ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। কয়েকটি বিষয় মাথায় নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। রহস্য উদঘাটন করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।’

হিফজুরের শ্বশুর আইয়ুব বলেন, ‘হিফজুর যে ঘরে থাকত ওই ঘরটি তার মায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত। পাশের আরও দুটি ঘরে তার মামারা থাকতেন। জমি নিয়ে মামাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল হিফজুরের। এর বাইরে আমার জানা মতে আর কোনো বিরোধ নেই।’

হিফজুরের মামি আফিয়া বেগম বলেন, ‘জমি নিয়ে মামাদের সঙ্গে হিফজুরের কোনো বিরোধ নেই। বরং হিফজুরের পারিবারিক কলহ ছিল।’

পুলিশ জানায়, হিফজুর সকালে ফয়েজ নামে একজনকে ফোন করে তাকে বাঁচানোর জন্য বলেছিল। ওই ফয়েজই তার বাড়িতে এসে তাকে উদ্ধার করে। এজন্য তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিক সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল করে বেলা দুইটার দিকে নিহত তিন জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। 

এলাকাবাসী জানায়, হিফজুর সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। তার পরিবারে এমন ঘটনা রহস্যজনক। তারা দ্রুত রহস্য উদঘাটন করে দোষিদের ধরতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন > ঘরে পড়ে ছিলো ২ শিশুসহ মায়ের লাশ, আহত বাবা হাসপাতালে

নোমান/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়