‘সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য স্বামীকেই দায়ী করেছেন নুসরাত’

রাজধানীর আগারগাঁয়ে সংসদ সচিবালয় কোয়ার্টারে নুসরাত জাহান মৃত্যুর জন্য স্বামী মিল্লাত মামুন দায়ী। নুসরাত তার সুইসাইড নোটে একথা লিখে গেছেন।

বুধবার (১৬ জুন) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) জামিল হোসাইন আসামি মিল্লাত মামুনকে আদালতে হাজির করে সংশ্লিষ্ট থানায় দায়ের করা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে এমনটাই উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘মিল্লাত মামুন ভিকটিম নুসরাত জাহানকে মারধর ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। ক্রমাগত এমন অপমানে বিপর্যস্থ হয়ে নুসরাত আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে তাদের বিয়ের হলফনামার ফটোকপি, দুই পৃষ্ঠায় নুসরাতের লেখা সুইসাইড নোট এবং একটি ছবি উদ্ধার করা হয়। নুসরাত জাহান সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য তার স্বামী দায়ী বলে উল্লেখ করেন। প্রাথমিক তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’

মামলার তদন্ত চলছে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ঘটনার প্রকৃত তথ্য না দিয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য মিল্লাত মামুনের সাত দিনের রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তা।
শুনানি শেষে আদালত মিল্লাত মামুনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকা থেকে র‌্যাব-২ এর একটি দল মিল্লাত মামুনকে গ্রেপ্তার করে।

নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা রত্ম কান্তি রোয়াজা ১২ জুন শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, মামুন মিল্লাত নিজেকে বিসিএস ক্যাডার পরিচয় দিয়ে নুসরাত জাহানকে ২০১৯ সালে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত করে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে মিল্লাত নুসরাতকে শারীরিক আঘাত ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। যা নুসরাত তার বাবাকে জানায়। মিল্লাত জুয়া, নেশা এবং বিভিন্ন পরকীয়ায় আসক্ত ছিল। ১২ জুন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নুসরাত তার বাবাকে ফোন দিয়ে জানায়, মিল্লাত তাকে শারীরিক নির্যাতনসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। তাকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। না গেলে হত্যার হুমকি দেয়। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ রত্ম কান্তি রোয়াজাকে নুসরাতের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানায়।