ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

তিন লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র হাসপাতালে শুধু ‘নাই আর নাই’

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০০, ৫ আগস্ট ২০২১  
তিন লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র হাসপাতালে শুধু ‘নাই আর নাই’

ডাক্তার নার্সসহ জনবল সঙ্কটে ব্যহত হচ্ছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা। এটি তিন লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র।

দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে শূন্য রয়েছে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, এক্সরে-টেকনিশিয়ান, এনেস্থেসিয়া এক্সপার্ট, ল্যাব টেকনিশিয়ান, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার, প্যারামেডিক্যাল ডাক্তার, নার্স ও ওয়ার্ড বয়, নৈশ প্রহরীর পদ। এছাড়াও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য আলাদা কেবিন, পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়ারও রয়েছে অভিযোগ।

স্থানীয়রা রোগীরা জানান, এখানে চিকিৎসা নিতে আসলে শুধু ‘নাই আর নাই’ শব্দ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটি টাকার উন্নতমানের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই অবস্থা অপারেশন থিয়েটারের। গাইনি ডাক্তার ও এনেস্থেসিয়া এক্সপার্ট না থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। বর্হিবিভাগে প্রতিদিন রোগী দেখেন চারজন ডাক্তার। প্রতিদিনই থাকে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেখানে সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই নেই।

চিকিৎসা নিতে আসা রৌমারী উপজেলার ইজলামারী গ্রামের শাহিন আহম্মেদ জানান, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে যদিও ডাক্তারের দেখা পেলাম কিন্তু ওষুধ যা লিখেছেন তা বাইরে থেকে কিনতে হবে। হাসপাতালে নাই।

উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের এক্সরে টেকনিশিয়ান না থাকায় বাইরে থেকে এক্সরে করতে হচ্ছে।

রৌমারী হাসপাতালের সিনিয়র অফিস সহকারি আব্দুস সাত্তার জানান, দীর্ঘদিন থেকে রৌমারী হাসপাতালের ডাক্তারসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৬২টি পদ ফাঁকা রয়েছে। এর মধ্যে ডাক্তার ২৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন, নেই ডেন্টাল সার্জন, কনসালটেন্ট ৫ জনের জায়গায় একজনও নেই।  নার্স ২০ জনের জায়গায় আছে ৮ জন। অপারেশন থিয়েটারের এনেস্থেসিয়া এক্সপর্নে নেই, ল্যাব টেকনেশিয়ান নেই, এক্সরে টেকনিশিয়ান নেই, এছাড়াও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদ ফাঁকা রয়েছে ১৭টি, চতুর্থ শ্রেণির ১৩টি, নৈশ প্রহরী একজনও নেই।

রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যাহ বলেন,  জেলা শহর হতে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন উপজেলা রৌমারী। এ উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জনবল সঙ্কটে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই রুগ্ন হয়ে আছে।

তিনি বলেন, গাইনি ডাক্তার না থাকায় প্রসূতি মায়েদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

জনবল সঙ্কটের কথা স্বীকার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, সঙ্কট নিরসনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপকে একাধিকবার জানিয়েছি। সরকারি লোক নিয়ে আসা কঠিন হলেও আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

তিনি বলেন, হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করণের ঘোষণা হলেও এখন পর্যন্ত ৫০ শয্যার চাহিদা অনুযায়ী কোন বরাদ্দ পাইনি। 

বাদশাহ্ সৈকত/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়