ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

চীনা ভ্যাকসিনের চতুর্থ কিস্তির জন‌্য ২৬৮ কোটি টাকা ছাড়

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৮, ২৬ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৯:১০, ২৬ আগস্ট ২০২১
চীনা ভ্যাকসিনের চতুর্থ কিস্তির জন‌্য ২৬৮ কোটি টাকা ছাড়

চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক‌্যাল প্রোডাক্টস কোম্পানি লিমিটেড থেকে চতুর্থ কিস্তির করোনা ভ্যাকসিনের জন‌্য ৩ কোটি ১৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ২৬৮ কোটি ৫৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছাড় করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে শর্ত সাপেক্ষে এ অর্থ ছাড় করা হয়েছে।

গত বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপ-সচিব ফারুক-উজ-জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ অর্থ ছাড়ের মাধ্যমে সিনোফার্ম থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন কেনার জন‌্য ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ৫৯ টাকা পরিশোধ করা হলো, যা মোট অর্থের ৮৩ শতাংশ।

চীনের ভ্যাকসিন কিনতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের চাহিদার বিপরীতে ২৬৮ কোটি ৫৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের বরাদ্দপত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে—অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দ‌্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ এবং দ‌্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুসরণসহ যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে এবং এ অর্থ চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সংশ্লিষ্ট কোডে সমন্বয় করা হবে।

সিনোফার্ম থেকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে। বাকি ভ্যাকসিন খুব শিগগির বাংলাদেশে পৌঁছাবে।

অর্থ বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘গণটিকা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ভ্যাকসিন কেনার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল আলাদা করে রাখা আছে। তবে, জানি না কেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গণটিকা কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির গতি ফিরে আনা সম্ভব হবে না, যতক্ষণ না আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করি।’

করোনার তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে সতর্ক করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুত নই। তবে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিশেষজ্ঞরা আগামী সেপ্টেম্বরে সেখানে তৃতীয় তরঙ্গের অনুমান করছেন।’

বাংলাদেশের কয়েকজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন, করোনার তৃতীয় তরঙ্গ মোকাবিলা করতে হলে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে।

ইউনিসেফের সাবেক কর্মকর্তা এবং সিনিয়র ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট বে-নজির আহমেদ বলেছেন, ‘দেশের মানুষের মধ্যে টিকার ব্যাপক চাহিদা আছে। জরুরি ভিত্তিতে এ চাহিদা পূরণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের নাগরিকরা ভ্যাকসিন নিতে মরিয়া হয়ে উঠবে, কারণ ভারত তৃতীয় তরঙ্গের কাছাকাছি আছে, যা বাংলাদেশেও আঘাত হানতে পারে। দ্রুত টিকা দেওয়া গেলে তৃতীয় তরঙ্গের আশঙ্কা কমিয়ে দিতে পারে।’

জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকায় (১৫০ মিলিয়ন ডলার) ১৫ মিলিয়ন ডোজ করোনার টিকা কিনতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রথম চালানটি জুলাই মাসে দেশে এসেছে। বাকিগুলো তিন মাসের মধ্যে দেশে পৌঁছানোর কথা।

অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘চীনের সঙ্গে ভ্যাকসিন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার সময় আমরা কঠোরভাবে নিয়ম অনুসরণ করছি। চুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে।’

এর আগে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চীনা ভ্যাসকসিনের দাম উল্লেখ করায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়