ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শুভ্র গালিচার দেশে

নূর আহমদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ২৫ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ১৮:২২, ২৫ অক্টোবর ২০২১

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রাচুর্যে ভরা সিলেট। চা-বাগান, জলমগ্ন বুনো বন, পাথুরে নদী, পাহাড়ের কোল থেকে নেমে আসা ঝর্ণা, দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশির হাওরসহ পুরো সিলেট বিভাগে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সব পর্যটনকেন্দ্র। এই অঞ্চলে রয়েছে ৩৬০ পীর-আউলিয়ার মাজার। আছে প্রাচীন মসজিদও। প্রকৃতিকে কাছে থেকে দেখার মত রয়েছে বহু পর্যটনস্পট। নয়নাভিরাম ভোলাগঞ্জের ‘সাদা পাথর’ তেমনি একটি পর্যটন কেন্দ্র।

সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের ভোলাগঞ্জ দেশের বৃহত্তম পাথরকোয়ারী অঞ্চল। সিলেট থেকে এর দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার।

এখানে রয়েছে সাদা পাথর, উঁচু পাহাড় আর ধলাই নদীর স্বচ্ছ নীল জলরাশি, সঙ্গে দু-একটা ঝর্ণার গড়িয়ে পড়া। হাঁটু পানির নিচে থাকা চিকচিকে রূপালি বালি আর ছোট-বড় অসংখ্য সাদা পাথর সবাইকে মুগ্ধ করবে। এখানে রয়েছে চোখ জুড়ানো, মন ভোলানো পরিবেশের অপরূপ সম্মিলন। প্রকৃতির খেয়ালে গড়া নৈসর্গিক নিখুঁত সৌন্দর্যমণ্ডিত এই জায়গাটি ‘সাদা পাথর’। এ যেন সাদা পাথরে মোড়ানো এক নৈসর্গিক গালিচা। যেখানে রয়েছে শীতল জলে পা ডুবিয়ে আনমনে পাহাড়ের দিকে চেয়ে থাকার হাতছানি। নির্জন, নৈসর্গিক এই জায়গাটির সামনে সবুজ পাহাড়ের সারি। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া প্রচণ্ড স্রোতের স্বচ্ছ শীতল জল দেখার সুযোগ রয়েছে পর্যটকদের।   

ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে ছোট-বড় টিলার মতো পাহাড়গুলোকে মুড়িয়ে রাখা চা-বাগান, সবুজ ক্ষেত, ছোট-বড় নদী খাল পেরিয়ে যেতে হয় গন্তব্য স্থানে। শহর পার হলেই চোঁখ ধাঁধানো সবুজের হাতছানি। শহরের আম্বরখানা থেকে কিছুক্ষণ পরপর ছেড়ে যায় দো-তলা বিআরটিসি বাস। এর সাথে সাদা পাথর নামে আরেকটি পরিবহণ রয়েছে। মসৃণ, প্রশস্ত সড়কপথে ৬০/৮০ টাকার বিনিময়ে ৫০ মিনিটেই ধলাইয়ের উৎসমুখ সাদা পাথর। রির্জাভ সিএনজি অটোরিকশাতেও যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি। 
ভোলাগঞ্জ বাজার পেরিয়ে এক কিলোমিটারের মধ্যেই সাদা পাথরে যাওয়ার ঘাট। ঘাটে নামলেই সীমান্তের ওপারের মনোরম দৃশ্য  হাতছানি দিয়ে ডাকবে পর্যটকদের। ধলাই নদীর তীরে রয়েছে সারি সারি নৌকা। নৌকাগুলোতে ওঠা যায় ৮-১০ জন। নৌকায় একজন গেলেও ভাড়া গুনতে হয় ৮০০ টাকা। ঘাটের মুখে ছোট-বড় বেশ কিছু দোকান রয়েছে। পর্যটকদের জন্য পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।

বর্ষা মৌসুমে ধলাই নদীতে পানিতে টইটম্বুর থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যায়। হাঁটু পানি থাকে। তখন আসল সৌন্দর্য বেরিয়ে আসে সাদা পাথরের। দুই দিকে পাথর, মাঝখান দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্বচ্ছ জলধারা। শীতল জলধারায় পা দিলেই পানি আর সাদা পাথরের জাদুকরী শীতল স্পর্শ পর্যটকদের বিমোহিত করবে।
 

/সুমি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়