ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পণ্য গুদামজাতের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ টিসিবির

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১৪ নভেম্বর ২০২১  
পণ্য গুদামজাতের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ টিসিবির

বাজার স্থিতিশীল রাখতে পণ্য গুদামজাতের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এ লক্ষ্যে রাজশাহীর পবা উপজেলায় অফিস ও গুদাম নির্মাণের জন্য ২ দশমিক ৫৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। খুব শিগগির জমি অধিগ্রহণ করা হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গুদাম তৈরি করা হবে।

ক্রেতাদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিভিন্ন পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে টিসিবি। নিম্ন আয়ের মানুষ সাধারণত টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাক থেকে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ডাল ও চিনি প্রভৃতি পণ্য কম দামে কিনে থাকে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ের মানুষ টিসিবি থেকে পণ্য কিনে উপকৃত হয়েছে। বছরজুড়ে এ কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির।

পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহকরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ব্যাপকভাবে টিসিবির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। টিসিবি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো বাজারদরের চেয়ে কমে বিক্রি করায় সাধারণ মানুষ অনেকটা স্বস্তি পায়।

টিসিবি পণ্যের চাহিদা কয়েক গুণ বাড়লেও রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটির পণ্য গুদামজাত করার ক্ষমতা গত এক দশকেও বাড়েনি। 

এ বিষয়ে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন: ডাল, তেল, পেঁয়াজ, ছোলা ও খেজুর সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া, অভ্যন্তরীণ বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে টিসিবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টিসিবির কার্যক্রম বহু গুণ বেড়েছে।

পণ্য গুদামজাত করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ নিজস্ব গুদাম না থাকায় টিসিবিকে গুদাম ভাড়া নিতে হচ্ছে। যেকোনো জাতীয় জরুরি অবস্থার সময় টিসিবির দৈনিক প্রায় ২৫ হাজার ৬০০ টন পণ্য প্রয়োজন হয়। সারা বছর মালামাল মজুদ না করলেও সংস্থাটিকে এসব গুদামের ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। এসব গুদামের ভাড়াতেও তারতম্য ঘটে। ফলে, সংস্থাটিকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

এ বিষয়ে টিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন গুদাম ভাড়া নেওয়ায় সরকারি তহবিলের অপচয় হয়। পাশাপাশি পণ্যের মানও বজায় রাখা সম্ভব হয় না।’

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সংস্থাটি সারা দেশে ১৫টি গুদামে পণ্য সংরক্ষণ করে। এর মধ্যে মাত্র চারটি গুদাম টিসিবির মালিকানাধীন। গুদামগুলোর ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার টন।

ভাড়া করা গুদামগুলোতে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়না। ফলে, মাঝেমধ্যেই গুদামজাত পণ্য নষ্ট হয়। এতে সরকারি অর্থের অপচয় হয়।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘টিসিবি সারা বছর তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চায়। বিশেষ করে, ট্রাকে নিত্যপণ্য বিক্রি অব্যাহত রাখতে হবে। টিসিবি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। তবে, অল্প পরিমাণ পণ্য দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘একসময় মোট চাহিদার ২ শতাংশ পণ্য সরবরাহ করার ক্ষমতা ছিল টিসিবির। গত দেড় বছরে তা বেড়ে ১২ শতাংশ হয়েছে। সক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে গুদাম এবং কার্যালয় তৈরি করা হবে। কর্মপরিধি বাড়লেও টিসিবি কর্মচারী বাড়েনি। এদিকেও নজর দিতে হবে।’

টিসিবি চলতি বছরে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার পণ্য বিতরণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়