ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সিলেটের পথে উড়ন্ত বিমানে বিয়ে

ফজলে আজিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৭, ৩১ মে ২০২২   আপডেট: ১৩:০৭, ৩১ মে ২০২২
সিলেটের পথে উড়ন্ত বিমানে বিয়ে

কানাডাপ্রবাসী দুই ভ্রমণপিয়াসী ঠিক করেছেন দেশে গিয়ে বিয়ে করবেন। তবে গতানুগতিক পদ্ধতিতে বাসা, মসজিদ কিংবা কমিউনিটি সেন্টারে নয়। তারা বিয়ে করবেন আকাশে, উড়ন্ত বিমানে। সঙ্গে থাকবেন বিয়ে পড়ানোর জন্য কাজীসহ দুই পরিবারের সদস্য। 

২৯ মে বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর নিয়মিত ফ্লাইট বিজি-৬০৩ এ ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে অভিনব এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ সময় দুই পরিবারের সদস্যসহ মোট ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে এটিই প্রথম বিমানে বিয়ে। এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর সহযোগিতায় এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। আকাশপথে বিয়ে সম্পর্কে বর খায়রুল হাসান জানান, জীবনের এই স্মরণীয় মুহূর্তটি আরো স্মরণীয় করে রাখতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ঢাকা থেকে বিমান আকাশে উড্ডয়নের পরপরই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিয়ে পড়ান কাজী ওমর ফারুক। দোয়ায় শরীক হন বিমানের সব যাত্রী। বলাবাহুল্য এ সময় বিমানে অন্যান্য যাত্রীদের মধ্যেও বিস্ময় এবং আনন্দের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে। তারা পুরো আয়োজন আরো উৎসবমুখর করে তোলে। 

এ জন্য অবশ্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে অনুমতি নেওয়া হয় একমাস আগে। নিয়ম অনুযায়ী অন্যসব যাত্রীদের বিমানে আরোহণের পর নব দম্পতি বর-বধূর সাজে বিমানে আরোহণ করেন। বোর্ডিং পাস থেকে শুরু করে যাত্রার পুরোটা সময় বিমানে এক আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। বিয়ের পরপর অনেক যাত্রী নবদম্পতিকে অভিনন্দন জানান। অনেকে সেলফি তোলেন নব দম্পতির সঙ্গে। 

খায়রুল হাসান কানাডার  ভ্যানকুভারে থ্রাইভ ডিজিটাল কোম্পানিতে প্রজেক্ট লিড হিসেবে কর্মরত। কনে সাউদা বিনতে সানজিদা টরেন্টোর একটি নামকরা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স-এ কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করছেন। 

খায়রুল হাসান ভ্রমণপ্রেমী হিসেবে পরিচিত। দেশের ৬৪টি জেলা ঘুরে বেড়িয়েছেন। এখনো সুযোগ পেলে ঘুরে বেড়ান দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রভিন্সের ভ্যানকুভার থেকে ম্যানিটোবার উইনিপেগ পর্যন্ত ৫ দিনে ৫ হাজার কিলোমিটার ড্রাইভ করার অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। এ ছাড়াও টেকনাফ টু টরেন্টো নামে এক ট্যুরে ঘুরে বেড়িয়েছেন কানাডার প্যাসিফিক থেকে আটলান্টিক পর্যন্ত। এ সময় সঙ্গে ছিল একঝাঁক বাংলাদেশী ভ্রমণপ্রেমী। 

খায়রুল জানান, বাংলাদেশের রোড ট্রিপ খুব মিস করেন। দেশে যাওয়ার একমাসের মধ্যেই পুরনো ভ্রমণসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর ঘুরে বেড়িয়েছেন। যে ক’দিন থাকবেন বাকি সময়টুকু ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। তবে এবার আর বাড়ির অন্যদের ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে বেড়াতে যেতে পারবেন না। ভ্রমণপ্রিয় ছেলেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে তাই এবার বাবা-মাকেও রাজি হতে হয়েছে অন্যরকম বিয়ের আয়োজনে। আর ইতিহাস তো সাক্ষী রইলোই- ভ্রমণপ্রেমী খায়রুলের বিয়ে হলো ভ্রমণের মধ্যেই।  

/তারা/ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়