ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘ব্লাক লায়ন’ ১০ লাখে বিক্রি করতে চান রহমত আলী

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ২৯ জুন ২০২২  
‘ব্লাক লায়ন’ ১০ লাখে বিক্রি করতে চান রহমত আলী

রংপুরের রামপুরা এলাকার খামারি রহমত আলী। পরম যত্নে চার বছর ধরে পরিচর্যা করছেন বাড়িতে পোশা ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটির। শখ করে এর নাম রেখেছেন ‘ব্লাক লায়ন’। এবার ঈদুল আজহায় শখের লায়নকে বিক্রি করতে খাওয়া, গোসলসহ পরিচর্যার কমতি রাখছেন না রহমত আলী। ৩৩ মণ ওজনের ব্লাক লায়নের দাম হাঁকিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। 

দেশীয় খাবার খাইয়ে যত্ন করে ব্লাক লায়নকে লালন-পালন করেছেন রংপুর মহানগরের ১৭নং ওয়ার্ডধীন রামপুরা এলাকার খামারি রহমত আলী। 

রহমত আলী জানান, ব্লাক লায়নকে প্রতিদিন খড়, ভুসি, গম, ভুট্টা ও ঘাস খাওয়ানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে এসে দেখে যাচ্ছেন। কিন্তু দামের বেলায় তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি কেউ। দাম এখন পর্যন্ত ৭ লাখ টাকা উঠেছে। ঈদের শেষ হাট পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত দামের জন্য অপেক্ষা করবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছেন রহমত।

গরুটি দেখতে প্রতিদিন আশপাশের মানুষ ভিড় করছেন। অনেকে ফেসবুকে ছবি দেখে ফোনও করছেন। গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবার গরু লালন পালনে অনেক ব্যয়ের কথাও জানান খামারি রহমত আলী।

রহমত আলীর মতো রংপুরের প্রায় ২৫ হাজার খামারি স্বপ্ন দেখছেন কোরবানির ঈদ ঘিরে। চলতি বন্যা ও গত কয়েকমাসে দফায় দফায় গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি সংকটে ফেলেছে এ সব খামারিদের। পশুর প্রত্যাশিত দাম না পেলে পথে বসতে হবে তাদের। 

রংপুর ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর রহমান মিলন জানান, ভারতসহ নেপাল ও ভুটান থেকে গরু আমদানি হলে একদিকে যেমন স্থানীয় পশুর দাম নিয়ে সংশয় বাড়ে, অন্যদিকে বেড়ে যায় পশুর বিভিন্ন রোগ-বালাই। তাই এবারের ঈদে সীমান্ত দিয়ে পশু আমদানি বন্ধের জোর দাবি জানান ডেইরি খামার অ্যাসোসিয়েশনের এই নেতা।

রংপুরে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে অনলাইনে ১১টি পশুর হাট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। ‘পশুরহাট’ নামে অনলাইন পেজ খুলে এই হাট চালু করবে দুই একদিনের মধ্যে। এই অনলাইন পেজে গরু পালনকারীদের পশুর ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য থাকবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর আশাবাদী এই অনলাইন গরুর হাটে সাড়া পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে অর্ধশত পশুর হাট রয়েছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে বড় ৪টি। এসব হাটে প্রচুর গরু বিক্রি হয়। ক্রেতাদের মধ্যে অনেকে আগে ভাগে কোরবানির গরু কিনতে চায় কিছু কম দামে। অপরদিকে পশু মালিকরা বেশি দাম পাওয়ার আশায় বসে রয়েছেন। তাদের মতে, ঈদের আগে আরও অনেক হাট পাওয়া যাবে। সেই সময় বেশিদামে বিক্রি করতে পারবেন। তবে বিক্রেতাদের কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন ঈদের আগে পশুর দাম কমে যেতে পারে।

রংপুরের বড় বড় পশুর হাটগুলো হচ্ছে, লালবাগ, বুড়িরহাট, তারাগঞ্জ, পাগলাপীরহাট, বড়াইবাড়িহাট, চৌধুরানির হাট, নজিরেরহাট, পাওটানাহাট, কান্দিরহাট, সৈয়দপুরহাট, দেউতি, মিঠাপুকুর, বৈরাতি, জায়গিরহাট, শঠিবাড়ি, বালুয়াহাট, মাদারগঞ্জহাট, ভেন্ডাবাড়িহাট ইত্যাদি।

জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ট্রেনিং অফিসার বাবুল হোসেন জানান, জেলায় কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ পশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। আর চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ৩০০টি পশু। এবার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পশুর হাটে রোগ নির্ণয়ে থাকবে পশু চিকিৎসকের টিম থাকবে। 
 

আমিরুল/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়