ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

লুইসভিলে সান্ধ্য আইন ভেঙে রাস্তায় হাজারো বিক্ষোভকারী

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ২২:৪৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
লুইসভিলে সান্ধ্য আইন ভেঙে রাস্তায় হাজারো বিক্ষোভকারী

যুক্তরাষ্ট্রের লুইসভিল শহরে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ

কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে হত্যার অভিযোগ থেকে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিল শহর। সান্ধ্য আইন উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বৃহস্পতিবার রাত থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন।

ব্রিওনা টেলর নামের ওই কৃষ্ণাঙ্গ নারী স্বাস্থ্যকর্মী লুইসভিল শহরের বাসিন্দা ছিলেন। গত ১৩ মার্চ ভোরে তার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের গুলিতে মারা যান টেলর। ওই ঘটনায় করা মামলায় গ্র্যান্ড জুরি বুধবার জানিয়ে দেন, ওই অভিযানে যাওয়া তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে না। এর পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে লুইসভিলসহ বিভিন্ন শহরে।

বিক্ষোভ ঠেকাতে বুধবার লুইসভিলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। মোতায়েন করা হয় ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের। রাতে জারি করা হয় কারফিউ। তা উপেক্ষা করে রাস্তায় ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। বুধবারের ধারাবাহিকতায় বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবারও রাস্তায় নামেন। কারফিউ উপেক্ষা করে তারা সন্ধ্যার পর লুইসভিল শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হন। অনেকেই রাতভর স্থানীয় একটি গির্জার প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভকারী মাইকেল পাইলস বলেন, ‘আমরা কোনোমতেই আর শান্ত থাকতে পারি না। আমরা রাস্তায় নেমেছি আমাদের লোকজনকে এবং আমাদের যারা সমর্থন করেন, তাদের রক্ষা করার জন্য। আমরা আক্রান্ত হয়েছি।’

১৯ বছরের তরুণী গ্রেস পেনিক্স আফ্রিকান-আমেরিকান। তিনি বলেন, ‘আমি প্রায়ই বাসার সদর দরজার পাশ দিয়ে যাই আর ভাবি, এই বুঝি পুলিশ এলো। গুলি করে আমাকে হত্যা করল। ঠিক যেভাবে ব্রিওনা টেলরকে হত্যা করা হয়েছে। হতে পারে এটা আমি, আমার কোনো বন্ধু, চাচাতো ভাইবোন, চাচি বা মা, যে কেউ।’

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড খুন হন। ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। টেলরের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গ্র্যান্ড জুরির এই সিদ্ধান্ত তাতে ঘি ঢেলেছে। বিক্ষোভকারীরা বর্ণবাদের ইতি ঘটিয়ে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।

বুধবার রাতে বিক্ষোভের সময় গুলিতে আহত দুই পুলিশের একজন হাসপাতাল ছেড়েছেন। তার পায়ে গুলি লেগেছিল। অন্যজনের পেটে গুলি লাগে। ইতোমধ্যে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে।

লুইসভিলে অন্তত আগামী রোববার পর্যন্ত রাত ৯টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কারফিউ অব্যাহত থাকবে। শহরের কেন্দ্রস্থলের বেশিরভাগ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ আছে অনেক দোকানপাট।

এদিকে, নিহত ব্রিওনা টেলরের পরিবারের নিয়োগ করা আইনজীবী বেন ক্রাম্প বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্টে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্তের পেছনে ‘বর্ণবাদের শয়তান’ আছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বেন ক্রাম্প লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠাতারা সবার জন্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কৃষ্ণাঙ্গ লোকজনের জন্য সেটা নিশ্চিত করতে না পারব এবং বর্ণবাদের শয়তানের তাণ্ডবের ইতি ঘটাতে না পারব, ততক্ষণ আমরা শান্তি কী জিনিস তা জানতে পারব না।’

ছাবেদ সাথী/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়