প্রবাস

করোনাকাল এবং প্রবাস জীবন

 এবার (২০২১) ঈদ গেলো সাদা মাটা , কিছু ছিল না তেমন জমকালো তাক লাগানো ঘটনা ঈদ ঈদ ভাববার মতন। গৃহেই ছিলাম। গৃহবাসী আমরা সবাই এই করোনাকালে।

গেলো বছর তো এই ডালাসে (যুক্তরাষ্ট্র) ঈদের নামাজই হয়নি।  হয়েছে এই বছর, তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দূরেই রেখেছিলো জামাতে নামাজে যেতে অনেককেই।

এই প্রবাসে আসার পর থেকেই ঈদের দিনে নামাজে যাওয়াই ছিল বিশেষ আকর্ষণীয় বিষয়। ছেলে-মেয়ে বুড়া শিশু সবাই এদেশে নামাজে জামাতে যেত। বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় কখনো ঈদের নামাজে যাওয়া হয়নি।  অনেক সাজগোজ করে কত দেশের কতজন যার যার নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতির ধারক বাহক পোশাকে আসতো মসজিদে। এটা দেখতে ভালো লাগতো খুব। বলা যায় খুবই দৃষ্টিনন্দন ছিল। 

ঈদের দিন এই প্রথমবার অফিস করেছি।  যেহেতু কোথাও যাওয়ার নেই তাই অফিস করাই ভালো।  অফিসও তো করি বাসা থেকে।  তাই থাকা হয়েছে বাসাতেই।

এবার ঈদে এখানে আমরা কেউ কিছু কিনিনি বললেই চলে। দেশে দেখলাম মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন কেনাকাটায়।  এবারের এই ঈদে আমাদের সংযমী হওয়া জরুরি ছিল।  আমি তো মনে করি, একটা পয়সাও বাজে খরচ না করে কাউকে দান করা খুব জরুরি এখন।  প্রচুর মানুষ কষ্টে আছে।

করোনা সবকিছু বদলে দিয়েছে।  প্রায় ১৬ থেকে ১৭ মাস  হয়ে গেলো আমরা কারও বাড়িতে যাই না।  দাওয়াত পানি সব বন্ধ।  অনেকে নিজেরা নিজেরা ছোট ছোট করে দাওয়াত করেন। আমি এতদিন যাইনি কোনোটাতেই। একজনকে হা বললে আরেকজনকে না বলি কিভাবে।  কিন্তু ভ্যাকসিন যেহেতু নেওয়া হয়ে গেছে, হয়তোবা সহসাই অল্প অল্প করে বেড়ানো শুরু হয়ে যাবে।

এই করোনাকালেও লিখছি। লিখে যাচ্ছি। ভালো লাগে লিখতে তাই লিখে তো যাচ্ছি-ই অবিরাম।  তবে মনে হয় ছাপানোর জায়গাটা থাকা খুব দরকার।  না হয় লেখার গতি কমে আসে। পত্রিকাগুলোতে সাহিত্যের পাতায় টান ধরেছে করোনার কারণে। যাই হোক লিখে যাচ্ছি।

আমরা যা ভাবি তা সব সময় হয় না।  আমার তো খুব ইচ্ছে করে দেশে গিয়ে টানা চার মাস থাকবার।  এটা যেন একটা স্বপ্ন হয়ে উঠেছে। বহু বছর প্রবাসী, তাই খুব ইচ্ছে লম্বা সময় কিছুদিন থাকি দেশে (বাংলাদেশ) গিয়ে।  কবে যে এ আশা পূরণ হবে তা জানা নেই।

লেখক: কথাসাহিত্যিক