প্রবাস

‘মুক্তির লড়াইয়ে এত বেশি মানুষ হত্যা পৃথিবীতে বিরল’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাস ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ জনতা ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ বিমান, বাংলাদেশ স্কুল, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধি এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি।  

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এর পর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

দূতাবাসের কর্মকর্তারা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মাতৃভূমিকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছিলেন। তিনি শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান।   

রাষ্ট্রদূত মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিতা বীরাঙ্গনাদের অবদানের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। যাদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা চিরকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করি, যার পুরোধা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতা ঘোষণার পর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে রাখা হয়। পরাধীনতা থেকে মুক্তির লড়াইয়ে ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হয়। ৯ মাসের যুদ্ধে এত বেশি মানুষ হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অভিযাত্রা এবং বাংলাদেশের অর্জনগুলো তুলে ধরে তিনি জাতির পিতার সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণ ও বৈষম্যহীন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে সবাইকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকার অনুরোধ করেন। সব প্রবাসীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি। 

উল্লেখ্য, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দূতাবাস ৭ মার্চ সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হোটেলে রিসিপশনের আয়োজন করেছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আহমেদ আলি আল সাইখ প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া বিভাগের পরিচালকসহ সরকারী কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, সিআইপিগণ, পেশাজীবীসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ রিসিপশনে যোগ দেন।