আমিনুল ইসলাম নেপাল থেকে

হল না জেতা, পেল না ৩২ লাখ টাকা

নয় বছর পর এসএ গেমস ফুটবলে সোনা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে নেপালে এসেছিল বাংলাদেশ দল। ভুটানের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরে সেই স্বপ্নে ধাক্কা খায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর মালদ্বীপের বিপক্ষে ড্র ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখে।  

সোনা জয়ের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে হলে শেষ ম্যাচে নেপালকে হারাতে হবে জামাল ভূঁইয়া-সাদ উদ্দিনদের। দলকে উজ্জীবিত করতে এই ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন মোটা অঙ্কের প্রাইমজানির ঘোষণা দেয়। আজ নেপালকে হারাতে পারলেই ৪০ হাজার মার্কিন ডলার তথা ৩২ লাখ টাকা পেত জামাল-জীবনরা।

কিন্তু সেটা আর হল কই? নেপালের বিপক্ষে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে হেরে সোনা জয়ের কক্ষপথ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ৩২ লাখ টাকা পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হয়েছে তারা। সোনা নয়, টাকা নয়, ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে তাদের।

১৯৯৯ সালে এসএ গেমসে এই নেপালকে হারিয়েই ফুটবলে প্রথম সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০ বছর পর সেই নেপালেই ভরাডুবি জামালদের।

ফাইনালে যেতে হলে বাংলাদেশকে হারাতে হবে নেপালের। সেটার জন্য প্রস্তুত হয়েই মাঠে নেমেছিল স্বাগতিকরা। তাদের সমর্থন দিতে এদিন গ্যালারিও ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। ভারতের বিপক্ষে এমন ভরা গ্যালরিতে বাংলাদেশ দল দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও এখানে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। ম্যাচের ১১ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এ সময় পাল্টা আক্রমণে দ্রুত গতিতে বল নিয়ে ডি বক্সের মধ্যে প্রবেশ করা নেপালের অধিনায়ক সুজল শ্রেষ্ঠার ছোট পাস খুঁজে নেয় সুনীল বালকে। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে বোকা বানিয়ে বল জালে পাঠাতে তিনি ভুল করেননি।

পাঁচ মিনিট পরই সেই গোলটি পরিশোধ করতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু মোহাম্মদ রবিউল হাসান যে শট নেন তা পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। তাতে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।  

বিরতির পর কিছুটা গুছিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ছোট ছোট পাসে খেলতে থাকে তারা। সমতা ফেরানোর কয়েকটি সুযোগও পায়। কিন্তু কাঙ্খিত গোলটি করতে ব্যর্থ হয়। ৬১ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এ সময় জামালের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন তিনি। তার সামনে ছিলেন শুধুই নেপালের গোলরক্ষক। কিন্তু হিমালয়ের হিমশীতল বরফের মতো জমে যান ইব্রাহিম। তিনি যে শটই নিতে পারেননি!

এরপর এগিয়ে থাকা নেপাল রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করে খেলে। তাতে গোল করার মতো আর কোনো ভালো সুযোগ বাংলাদেশ তৈরি করতে পারেনি। উল্টো মেজাজ হারিয়ে দুটি হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। একটু পর রেফারি শেষ বাঁশি বাজান। তাতে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ দল।  

পোখরা/আমিনুল/নাসিম