শিল্প ও সাহিত্য

পলাশের ঘুড়ি || রণজিৎ সরকার

করতোয়া নদী। নদীতে নৌকা চলে। নদীর পাশে গ্রাম। গ্রামের নাম পাখিপুর। গ্রামটি সবুজে ভরা। মাঠে ধানখেত। রাস্তায় অনেক গাছ। গাছে পাখি বসা। অনেক রকমের পাখি। পলাশ পাখি দেখে। গাছের নিচে দাঁড়িয়ে।

 

পলাশ পাখি দেখে বলল, ‘পাখি ভাইয়েরা। পাখি ভাইয়েরা। একটু উপকার করবে?’ গাছের ডাল নাড়ল। কে যেন বলল, ‘আমরা পাখি না। আমাদের পাখি বলছ কেন?’পলাশ মাথা নেড়ে বলল, ‘তোমরা তো পাখি। আমি চিনতে পেরেছি। চিনতে ভুল হয়নি আমার।’‘তুমি ভুল দেখছ?’

 

পলাশ মাথা নাড়াল। তারপর বলল, ‘ভুল দেখছি। তোমরা পাখি না। তাহলে কে তোমরা?’‘পরিচয় দেব। একটু পর। তোমার উপকার করতে হবে। কী উপকার করতে হবে। সে কথা আগে বলো?’‘তোমরা কী পারবে। আমার উপকার করতে?’‘কী উপকার বলো?’‘আমার ঘুড়ি ছিল। একটা ঘুড়ি। ঘুড়িটা উড়াতাম। ঘুড়িটা এখন নেই। আমার কাছে।‘কী হয়েছে? হারিয়ে গেছে। কীভাবে হারালো। কোথায় হারালো।’

 

পলাশ ডান হাত উঁচু করল। দক্ষিণের গাছটা দেখাল। তারপর বলল, ‘ঘুড়ি উড়াচ্ছিলাম। হঠাৎ জোরে বাতাস। ঘুড়ির সুতা ছিঁড়ে যায়। ঘুড়ি বাতাসে উড়তে থাকে। উড়তে উড়তে গাছে বাঁধে। ওই গাছে। ঘুড়িটা নামাতে পারছি না।’‘তুমি বুঝলে কেমন করে। আমরা ঘুড়ি নামাতে পারব?’‘তোমরা তো উড়তে পার। একগাছ থেকে অন্যগাছে। তাই বলছি। বড় আশা করে। ঘুড়িটা আমি পাব তোমাদের দ্বারা।’

 

‘ঠিক আছে। ঘুড়ি তুমি পাবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই।’পলাশ খুশিতে হাততালি দিল। তারপর বলল, ‘কখন দেবে?’‘একটু পর। তুমি নিচে বসে থাক।’পলাশ বসে আছে। গাছের নিচে। কথা বলে না কেউ। ও নিজের সাথে কথা বলে। ধীরে ধীরে রাগ হয় পলাশের। হাতে মাটির ঢিল নেয়। রাগে ঢিলটা গাছে ছুড়ে মারে। পাখিরা উড়ে যায়।

 

হঠাৎ ঘুড়ি পলাশের সামনে। পলাশ অবাক। আমার ঘুড়ি। এদিক-ওদিক তাকায়। আশপাশে কেউ নেই। পলাশ বলল, ‘কে ঘুড়ি নামালো।’‘আমি।’‘আমি কে?’‘আমি পরি।’‘তুমি পাখি না।’‘না। আমি পাখিদের সাথে থাকি। আসলে আমি পরি। বিপদে ডাকবে। হাজির হব আমি। তোমার উপকার করব।’‘সত্যি। তোমাকে কি নামে ডাকব। কখন কীভাবে পাব।’‘আমাকে ডাকবে পরিবন্ধু বলে।’‘ঠিক আছে। তুমি আমার পরিবন্ধু।’

 

পলাশ অনেক খুশি। আনন্দে ঘুড়িটা নিয়ে রওনা হলো। বাড়ির উদ্দেশে।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৫/রণজিৎ/সনি