শিল্প ও সাহিত্য

সাপের সঙ্গে আমি || রণজিৎ সরকার

স্কুলে যাচ্ছি। হঠাৎ দেখি সাপ। রাস্তার তিন মাথায় শুয়ে আছে। থমকে দাঁড়ালাম। সাপটি ফণা তুললো। তাকাল আমার দিকে। বলল, ‘ভয় করো না। খোকা মণি। আমাকে বাঁচাও। মরে যাচ্ছি। খুব খিদে পেয়েছে। আমাকে নিয়ে চল।’

 

আমি অবাক হলাম। সাপ কথা বলে। ভয়ে ভয়ে তাকালাম এদিক-ওদিক। সামনে সাপ। আশপাশে কাউকে নেই। কী করব। ভাবছি, দেব দৌড়।ফণা তোলা সাপ। মাথা একবার সামনে আবার পেছনে নেয়।  সাপ বলল, ‘দৌড় দিও না। ভয় নেই। ক্ষতি করব না। তোমার স্কুলব্যাগে নাও আমাকে।’ভয়ে ভয়ে বললাম, ‘কোথায় যাবে?’‘তোমার স্কুলে।’‘তুমি সাপ। স্কুলে যাবে কেন?’‘খিদে পেয়েছে।’ ‘স্কুলে কী খাবে?’‘স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তায় দোকানে খাব। দোকানে দুধ আছে। সেই দুধ খাব।’‘তারপর কোথায় যাবে?’‘তোমার স্কুলে।’‘হায়, হায়, স্কুলে। তোমাকে মেরে ফেলবে আমার বন্ধুরা।’‘কেউ মারবে না। মারতে পারবে না।’‘মারবে না কেন?’‘ভয় দেখাব না। খেলা দেখাব। মজার খেলা দেখাব। সবাই মজা পাবে। কেউ মারবে না। একবার নিয়ে চল। দেখো কী করি।’

 

সাপ স্কুলব্যাগের ভেতর ঢুকল। ব্যাগ আমার কাঁধে। ভয়ে ভয়ে যেতে লাগলাম। কিছু দূর গেলাম। সাপ বলল, থাম। পাশে দোকান। দুধ-কলা আছে। নিয়ে আসো।

 

ব্যাগটা রাখলাম। সাপটা বের হলো। দোকানদারের সামনে গেল। ফণা তুলে দাঁড়াল। দোকানদার ভয় পেল। দোকানদারকে বললাম, দুধ-কলা দেন। সাপ খাবে। দোকানদার তাড়াতাড়ি দিল। সাপ খেয়ে ফেলল। সাপটাকে ব্যাগে তুললাম। নিয়ে এলাম স্কুলে।

 

ব্যাগটা মাঠে রাখলাম। ছাত্রছাত্রীদের ডাকলাম। সবাই চলে এসো। দেখো মজার খেলা। সবাই এসে হাজির। গোল হয়ে দাঁড়াল। সাপটা বের করলাম। সবাই অবাক। স্কুলেব্যাগে সাপ। ভয়ে দৌড় দিল অনেকেই। বললাম, ভয় নেই। কামড়াবে না কাউকে। সাপ খেলা দেখাবে। মজার খেলা। সেজন্য স্কুলে এসেছে। সবাই গোল হয়ে দাঁড়াল। সাপ শুরু করল খেলা।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুন ২০১৫/রণজিৎ/সনি