শিল্প ও সাহিত্য

মিতা আর মোমবাতি || রণজিৎ সরকার

মিতা রুমে ঢুকল। টেবিলের পাশে গেল। কেক রাখা। চার পাশে মোমবাতি। বেশ কয়েকটা মোমবাতি। এদিক-ওদিক তাকাল। রুমে কেউ নেই। ও অবাক হলো। আজ টেবিলে এসব রাখা কেন!হঠাৎ একটা মোমবাতি বলে, ‘মিতা, কেমন আছ তুমি?’মিতা অবাক হয়ে বলে, ‘কথা বলে কে?’মোমবাতি বলে, ‘আমি মোমবাতি। তোমার ভয় নেই।’মিতা মোমবাতির দিকে তাকিয়ে বলে, ‘তোমরা কথা বলতে পারো?’মোমবাতিরা নাচতে নাচতে বলে, ‘বছরে একদিন কথা বলব। তোমার সঙ্গে। সে দিনটা আজ।’‘আজ কোন বিশেষ দিন!’কেকটা নড়তে নড়তে বলে, ‘আমরা কেন এসেছি? তুমি বুঝতে পারছ না।’মিতা মাথা নাড়াতে নাড়াতে বলে, ‘না, বুঝতে পারছি না।’টেবিলে রাখা ম্যাচ। ম্যাচ বলে, ‘আমাকে হাতে নাও। ভেতর থেকে কাঠি বের করো। তারপর ফায়ার করো।’মিতা ম্যাচ হাতে নিল। কাঠি বের করল। ফায়ার করল।মোমবাতি বলে, ‘আমার মাথার সুতাতে আগুন দাও।’

 

মিতা একে একে সব মোমবাতিতে আগুন দিল। টেবিলে রাখা চাকু। চাকু বলে, ‘মিতা, আমাকে হাতে নাও।’মিতা ভয়ে ভয়ে চাকু হাতে নিল। কেক বলে, ‘এবার আমাকে কাটো। তোমার হাতের চাকু দিয়ে।’মোমবাতি বলে, ‘আমাদের নিভিয়ে দাও। ফুঁ দিয়ে।’মিতা মোমবাতিতে ফুঁ দিল। মোমবাতিগুলো নিভে গেল। চাকু দিয়ে কেক কাটতে লাগল মিতা। মোমবাতি বলে, ‘এবার বুঝেছে তো। আজ বিশেষ দিন। এই দিন প্রত্যেক মানুষের জীবনে বছরে এক বার আসে। আজ এই দিনটা তোমার।’মিতা মাথা নাড়াল। তারপর বলে, ‘বুঝতে পেরেছি। আজ আমার জন্মদিন।’টেবিলে রাখা জিনিস। সেগুলো একসঙ্গে বলে, ‘হ্যাপী বার্থ ডে টু ইউ মিতা।’ বেলুন বলে, ‘আমার পেছনে যে সুতা আছে। সে সুতা ধরো। তোমাকে নিয়ে যাব আকাশে।’হঠাৎ মিতার ঘুম ভেঙে গেল। বিছানায় উঠে বসল। হাত দিয়ে চোখ নাড়তে লাগল। এর মধ্যে ওর মা রুমে এল। মাকে মিতা বলে, ‘মা, আজ আমার জন্মদিন?’মা বলে, ‘হ্যাঁ, আজ তোমার জন্মদিন। সন্ধ্যায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান হবে। তোমার বন্ধুরা আসবে।’মিতা খুশি হয়ে বলে, ‘তাই মা!’‘হ্যাঁ। এবার হাত-মুখ পরিষ্কার করে এসো। নতুন পোশাক পরতে হবে।’মায়ের দিকে তাকিয়ে মিতা বলে, ‘আমি তো জন্মদিন পালন করলাম। একা একা।’‘কখন?’‘স্বপ্নে।’‘তাই। স্বপ্ন করেছ। এবার বাস্তবে করতে হবে। যাও, ফ্রেস হয়ে এসো।’

 

মিতা ফ্রেস হতে গেল। একটু পর নতুন পোশাক পরল। বন্ধুরা এল। সবাইকে নিয়ে জন্মদিন পালন করল মিতা।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জুলাই ২০১৫/রণজিৎ