শিল্প ও সাহিত্য

পাঁচ তরুণের কবিতা

                 

অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেম || শারমিন সুপ্তিমাঘ মাসে কখনো বৃষ্টি হতে শুনেছ? আজ হচ্ছে মুষলধারায় বৃষ্টি,অনাকাঙ্ক্ষিত কিন্তু অদ্ভুত মধুর আবেশ জড়ানো!ঠিক যেন তোমার ভালোবাসার মতো,মৃতপ্রায় জীর্ণ জীবনে স্বপ্নের নূপুর রিনিঝিনি করে ওঠে!কান পেতে শোনো ঐ ঝড়ো হাওয়া,হারিয়ে যেতে চাওয়া শীতের আবেশআবার ফিরিয়ে এনেছে; ঠিক তোমার স্পর্শে নিথর দেহযেমন প্রাণ ফিরে পেয়েছিলবিদ্যুতের ঝলকানি দেখেছ? যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে ধরিত্রীর ওপর!ঠিক যেমন করে আঘাত করেছিলে তুমি,নিজেকে ফিরিয়ে নিয়ে আমার জীবন থেকেকাচের বুকে বৃষ্টির আছড়ে পরার শব্দ শুনেছ? যেন কাচের বুক চিড়ে ক্ষতবিক্ষত করছে;ঠিক যেমন আঘাতে তুমি,রক্তাক্ত করেছিলে আমার হৃদয়;অশ্রুসজল দু’নয়নে আমি আজও দাঁড়িয়ে,তুমি হেঁটে গেছ অন্য পথ ধরে!

অন্যদের সময়ে || অহ নওরোজঐ কারা; কারা ঐ,ছায়া কেন কায়াময়?আমার প্রিয় অন্ধকারের ভেতর যত্নহীন ভায়লেট ফুলের মতনকাঁপছে ঐ কারা?চুপ!ঐ দেখো অমাবস্যা কাঁপছে,কাঁপছে মায়াকাঁপছে মধু,কাঁপছে জীবন্ত কিংবদন্তী।কাঁপছে আলেয়ার পুষ্ট শরীর।রকমফের পুত্রবধূর আঁখিকাঁপছে মৃদু,নদীর ঘাটেশালুক ফোটার তালে তালে।ঐ দেখ‌,দেখই না একবার চেয়ে।সাম্প্রতিক সময়ের এই কাঁপারহস্যআমাকে কাঁপায়।আমার নখ অন্ধকারে ডুবে যায়; আমি দেখি,আমি দেখতে পাইপরিচিত মানুষগুলোর সাথেঘুমুচ্ছে অপরিচিতরা।সস্তা ভালোবাসার উপগ্রহ হয়েধার নিচ্ছে মৃদু আলো।আমার দুঃখ বাড়ে,বাড়ে আমার সুস্থতাও।(দুঃখ পেলে যে আমি সুস্থ হয়ে উঠি)পড়ে থাকতে ভালো লাগে আমার,আমি পড়ে থাকি,নরম ভেজা পাতার মতনঅজানা ঘ্রানের ভেতর।অতঃপর জমাটবাধা কুয়াশার মতন ঠেকেআমার বোধ।তবু নিজেকে চেপে রাখি।আরও গাড় হয় আমার অন্ধকার।কাঁপে শুধু ভায়োলেট ফুল।

বাজি || আমিনুল ই শান্ত তোমায় নিয়ে নিত্য চলে, জোয়ার-ভাটার ওঠানামার খেলা!তাই, লাল ফোঁটাটাতোমার নামেই ধরা- বায়ান্ন তাস হোক না এলোমেলো! বাজিটা ঠিক জিতেই যাব দেখো-আজ বিকেলে নীল শাড়িটা পরো-কপালে  টিপ নাইবা দিলে, হাতটা শুধু ধরো! এখন আমি ঋদ্ধ ঋষি যেন, বাজিটা তাই আমার হাতে- কষ্ট হলেও মানো।

শ্লীলতাহানী ও কয়েকটি দুঃখবোধ || জোবায়ের মিলনপিশাচ আসে ফিরে ফিরেহায়না আসে ফিরে ফিরেএকাত্তর আসে ফিরে ফিরে...বিবস্ত্র হয় কন্যা, জায়া, না হয় জননী!লাল পতাকা তুমি কি ঘুমাওসোডিয়াম লাইট তুমি কি অন্ধছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল তুমি কি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী?প্রাচ্যের অক্সফোর্ড দিশাহীন নৌকোলাগামহীন ঘোড়া।ঐতিহাসিক উদ্যান চোখ মোছে নিরালেপাতার আড়ালে লুকোয় লজ্জাবতী মেয়েমধুর ক্যান্টিন বিমর্ষ চেয়ে থাকে ক্ষমামগ্ন দৃষ্টিতেপূবের আকাশে লজ্জার রং- নিশি কালো।পাশ দিয়ে বুদ্ধরথ হেঁটে যায়বিরবির করে বলে যায়-এটা... আমাদের দেশ না

সংখ্যা || সায়মা হাবীব  উজির-রাজা মরে, সম্রাট বিভ্রাটে ব্যাঘ্র, হস্তী আছে, ইন্দুর মোটে নাই তল্লাটে সঙের রঙ্গে বিভঙ্গ দেখ্- আয় রে ভোলা চর এবং অচর জুইড়া তোর কঠিন মুষ্ঠি দোলা ঘোড়ার লাইগা ঘাস কাটছি অ্যাদ্দিন, দেখ্  তেরো বা ষোলো কোটি- দেখ্ খুদ খাইতে মুরগি আসে, কে বিলায় রোঠি খুল্লি মাইরা গুল্লি উড়াই, শান্ত হইয়া থাকি শান্তিতে একটু বইসা দাবা খেল্, দেখ্ কে কার দান জিতে পত্রিকার পাত্রে পাত্রে ঢাল্ সুরা- ঢাল্ পাত্র চুরমার ফুৎশিখায় কাব্য জ্বাল্- কালবর্জ্য হোক ছার     

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ আগস্ট ২০১৫/তাপস রায়