শিল্প ও সাহিত্য

আব্বাস ও ওসমানের কথোপকথন

ড. তানভীর আহমেদ সিডনী : কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের জন্মশতবর্ষে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। বাংলা কথাসাহিত্যে তাঁর লেখা ভিন্ন এক ভুবন সৃজন করেছে। হয়তো তাঁর লেখা সকল সময়ে আমাদের মহত্তর বোধে উন্নীত করার সুযোগ এনে দেয় না। সমকালীন জীবন ও রাজনীতি তাঁর লেখনিতে চিত্রায়িত হয়েছে। সমকালকে তিনি এক অসামান্য সৌন্দর্যে রূপায়ণ করেন। ক্লেদাক্ত জীবনকে তিনি তুলে আনেন বাস্তববাদী ধারায়। শওকত ওসমান সমাজ ও পরিবেশ চিত্রায়নের সময় ভুলে যান না তিনি ‘শ্রমজীবী লেখক’। তাই এ দেশের নিম্নবিত্তের যন্ত্রণা আর বেদনা তিনি শিল্পের আলোয় নিয়ে আসেন। তাঁর সৃষ্টি প্রসঙ্গে কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস লিখেছিলেন: ‘তিনি ঘোরতরভাবে সমকাল সচেতন। সমসাময়িক কালের মানুষ, রাজনীতি নানা ঘটনা ও দুর্ঘটনা, আন্দোলন, সংগ্রাম, সংঘাত, যুদ্ধ, আপোস প্রভৃতি নিয়ে তাঁর ক্রমবর্ধমান সচেতনতা তাঁকে ক্রমে স্পর্শকাতর করে তুলেছে। তার প্রতিক্রিয়া দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে।’

 

সমাজ সচেতন এই লেখক মার্ক্সবাদী রাজনীতির অনুসারী ছিলেন। তাই পুঁজিবাদের পথে লেলিনের সোভিয়েত ইউনিয়নকে হাঁটতে দেখে বেদনার্ত হন। তবে কি তিনি বামপন্থি রাজনীতির ভাষ্যকার ছিলেন? এ নিয়ে আরো সমালোচনা ও বিশ্লেষণ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এ লেখায় গল্পকারের সাথে তাঁর নির্মিত চরিত্রের সম্পর্ক সন্ধানের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে। শওকত ওসমানের গল্প আব্বাস-এ প্রবেশের আগে আরেক কথাসাহিত্যিকের বিশ্লেষণ উদ্ধৃত করা যায়। হ্যাঁ, আবদুল গাফফার চৌধুরীর বিশ্লেষণ এমন যে : ‘শওকত ভাই সব্যসাচী লেখক ছিলেন। যে তিনজন লেখক আমাদের কথাসাহিত্যের দৈন্য ঘুচিয়েছেন; উপন্যাস, গল্প, নাটকের জন্য পথ কেটে প্রশস্ত সড়ক তৈরি করেছেন তিনি তাঁদের একজন। এই তিন কথাশিল্পীর দুজন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ এবং শামসুদ্দীন আবুল কালাম আগেই চলে গেছেন।’

 

আব্বাস এক শ্রমজীবী কিশোরের গল্প। এমনি এক শ্রমজীবী লেখক শওকত ওসমান। আব্বাস তার গ্রাম থেকে ফিরছে শহরে, পথের সময়টুকু ঘিরেই পুরো গল্প আবর্তিত হয়। আব্বাসের জবানিতে আমরা পাই এক মায়ের মুখ, গ্রামবাংলার জনজীবন ও প্রকৃতি এবং একইসঙ্গে শ্রমজীবী কিশোরের স্বপ্ন আর স্বপ্নভাঙার কথন। আব্বাসের বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী মরিয়ম, তার মানে আব্বাসের সৎ মা। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন থাকবে। থাকবে বিশ্বাসের ঘাটতি। গল্পকার মরিয়মের সাথে আব্বাসের সম্পর্ক ভিন্ন এক সূত্র তৈরি করে। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, গল্পকার সমাজ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সচেতন। সে কারণে পুরো বিষয়টি অবলোকন করেছেন একজন সমাজতাত্ত্বিকের চোখে, প্রচলিত হিসেবে সেখানে তার লক্ষ্য ছিল না। সম্পর্ককে তিনি বিশ্লেষণ করেছেন সামাজিক হিসেবে। প্রথমেই মা ছেলের কথা লেখা হয় এভাবে: ‘মরিয়ম দাঁড়িয়ে থাকে পাথরের মূর্তির মতো। আব্বাস তার নিজের ছেলে নয়, হঠাৎ তার মনে পড়ে গেলো। এই স্মৃতির আঘাত তার চোখের পাতাদুটো শুকনো রাখলো না। সত্যই আব্বাস তার নিজের ছেলে নয়, মরিয়ম দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। স্বামী-গৃহে পা দেওয়া মাত্র সে জেনেছিল এই মাতৃহীন শিশুর খবরদারী তাকেই করতে হবে। তারপর কত ঝড় তার জীবনের উপর দিয়ে এলো আর গেলো। স্বামী মারা গেছে, তবু ঐ শিশুর মায়ায় সে গাঁ ছেড়ে বাপের বাড়ী চলে যায়নি, বুকের নিঙড়ানো সমস্ত স্নেহ দিয়ে সে আব্বাসকে বাঁচিয়েছে। পুরাতন দিনের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে মরিয়ম নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলো।’

 

পরিচয় পেয়েই পাঠক ঠিক করে নেন এখানে তাদের আন্তসম্পর্ক ভিন্ন পথে ধাবমান। আব্বাসের একখানি অস্পষ্ট ছবি তার চোখের সামনে ভাসে। কিন্তু এই ছবি মুছে ফেলার আগেই মায়ের কান্না আর শ্রম বিক্রির প্রসঙ্গ চলে আসে। মরিয়মের কান্না থেকে পাঠক বিষয়ান্তরে চলে যায়, তখন সে পুঁজিবাদী শোষণের রূপ নিয়ে ভাবার সুযোগ পায়। লেখকের অভিপ্রায় সেরকম। তাই লেখেন : ‘বড়লোকদের মেজাজ তো সব সময় ঠিক থাকে না। আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে মরিয়ম পাড়ার দিকে মুখ ফেরাল।’ অভাবের কষাঘাত যে কতটা প্রবল তার একটা চেহারা দেখে নেওয়া যেতে পারে।

 

পাঠক এবার শওকত ওসমানের জীবনের দিকে তাকাই। কোন অবস্থা তাকে তাড়িত করেছে এমনি জীবনভাবনার পথে হাঁটতে। তাঁর আত্মজীবনী থেকে জানা যায় যে, অভাবের সাথে তাঁর অল্প বয়সেই পরিচয়। কখনো কখনো অভাব পেছনে ফেলে সচ্ছলতা এলেও তা ক্ষণিকের দোলা দিয়ে আবার পেছনে থেকেছে। এই অভাবের সাথে অভিমানও করেছেন কখনো কখনো। তাঁর বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়:

‘রোজ রোজ যদি আলুভর্তা বা আলুর চাটনি আর ডাল ছাড়া কিছু না থাকে তখন মেজাজ বিগড়ে যায়। আমার মেজাজ বিগড়ে যেত। মা বোঝানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু কে শোনে অতসব যুক্তির কথা এই বয়সে? রাগে ভাতই খেলুম না।’

 

ছেলেবেলায় আব্বাসের ছায়া পেয়েছিলেন ওসমান। তাঁর লেখায় তাই শ্রমজীবী আর অভাবী মানুষ সব সময় মূর্ত হয়েছে। এই মার্ক্সবাদী সাহিত্যিক সমাজকে দেখেছেন গভীর এক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিজাত হয়ে। আব্বাস তাই আর কিশোর শ্রমিক হয়ে থাকেনি। একটি আধা সামন্ততান্ত্রিক সমাজের চেহারা চিত্রায়ন করেন- যে ছেলেটির বিদ্যায়তনে যাওয়ার কথা অর্থের কারণে তাঁকে কাজে যেতে হচ্ছে। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে অভাবের সাথে যে লড়াই করেছেন তা যেন তার গল্প রচনার পটভূমি হিসেবে ছিল।

 

রাজনীতিকে কেন্দ্র করে সাহিত্য রচনা করলেও তা রাজনৈতিক প্রচারপত্র হয়ে যায়নি বরং তা মানুষের জন্য শিল্পজাত ভাবনাপ্রসূত সৃষ্টিকর্মের অভিজ্ঞান হয়। এখানে পাঠকের চিন্তন ও ক্রিয়ায় যে সামাজিক সংকট তৈরি করতে চেয়েছেন তা যেন শিল্পের নয়া অবস্থান। আব্বাস গল্পে চিত্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রেও সচেতন ছিলেন শওকত ওসমান। সকালটা দুপুরের পথগামী, এ সময়ে ক্লান্ত আব্বাস রেল স্টেশনের পথে চলছে। পরিবেশ বর্ণনা প্রসঙ্গে লেখা হয় : ‘একটা বুনো পাখী আকাশের স্তব্ধতাকে দ্বিখণ্ডিত করে উড়ে গেল আব্বাসের মাথার উপর দিয়ে।’

 

এই চিত্রকল্পের পরেই তিনি রাজনৈতিক এক চিত্রকল্প তৈরি করেন। যেখানে লেখা হয় : ‘এক সারি জামের বনে ওপারের গাঁটাকে চোখ হতে মুছে দিয়েছে। তুমি যদি তাকাও, শুধু দেখবে জামের নীল পাতার জনতা আর উপরে স্তব্ধ দুপুরের আকাশ।’

 

জামপাতাকে জনতার সাথে প্রতিতুলনায় লেখক ভুলতে দেন না যে, জনশ্রেণি স্তব্ধ আকাশের তলে দাঁড়িয়ে নিজের ভাগ্য সন্ধানী হয়। কিন্তু তিনি সচেতন যেন তার লেখা শিল্পের ভুল পথে গমন না করে। এ প্রসঙ্গে প্লেখানভের (১৭৫৬-১৯১৮) উক্তি ঋণ করে লেখা যায় : ‘একজন শিল্পী চিত্রকল্পের পরিবর্তে যৌক্তিক সিদ্ধান্তের আশ্রয় নেন অথবা নির্দিষ্ট থিমকে প্রদর্শনের জন্যে চিত্রকল্পের আবিষ্কার করেন, তাহলে প্রবন্ধ ও রচনা না-লিখে নভেল, নাটক বা গল্প রচনা করলেও তিনি শিল্পী নন, একজন প্রচারক।’

আব্বাস গল্পে পাঠ করা যায় :

‘ভারী খারাপ লাগে আব্বাসের। মেজাজটা তার ঠিক থাকছে না! রোদে আর ঘামে তার শরীরটা জ্বলতে শুরু করেছে। না, আর কলকাতা যাবো না, এখানে জামবনের ছায়ায় শুয়েই থাকি। আবার মার কথা আব্বাসের মনে পড়ে। মার কষ্ট হবে কত। ধান ভানা কি কম কষ্ট, ঢেঁকির উপর সারাদিন থাকা। তার উপর যাদের ধান ভানে তারা কি জুলুমই না করে। কত গালিগালাজ। শহরের রোজগার ভাল করে শিখলে মার এ কষ্টটুকু সে মুছে দিতে পারবে।’

 

শওকত ওসমানকে সব সময় তাড়া করেছে অভাব। তিনি যেহেতু লেখাকে সাথী করেছেন আর তার মাঝে ছিল ঋজুতা তাই কখনো স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে পারেননি। ছাত্রজীবনে বই ছিল বালিশ আর পরিণত সময়ে পাণ্ডুলিপি বিক্রি করে জীবনযাপন করেছেন। এখানে একটি কথা বলা দরকার যে, অভাবের এই পর্বে তিনি কারো কাছে হাত পাতেননি। এমনি ঋজু ছিলেন এই কথাসাহিত্যিক।

এমন ঋজু দেখি আব্বাসকেও, পথ চলতে চলতে সে যখন তার স্মৃতি স্মরণ করে তখন একবারও কারো কাছে করুণা ভিক্ষা করে না। বরং মাথা উঁচু করে পথ চলতে থাকে। সে স্মৃতির কিয়দংশ উদ্ধৃত করা হলো:

‘মালিকের একটা ছেলে আছে আব্বাসের বয়সী। কত রকম তার কাপড়চোপড়, গাড়ী, খেলনা- সেদিন আব্বাস দেখে এসেছিল। ময়লা গেঞ্জি আর লুঙ্গি পরে সেদিন সে যেন মাটিতে মিশে যাচ্ছিল। কারখানায় সে খুব কেঁদেছিল। খোদা কেন আমাদের এই দূরবস্থা। আমাদের কি কোন পথ নেই?’

 

আব্বাসকে তিনি কোনো রাজনৈতিক ভাবনার প্রতীক করে তুলতে চাননি। বরং সমকালীন সমাজের মুখ হিসেবে প্রস্তুত করেছেন। আব্বাসের সাথে সাথে হেঁটেছে চিত্রকল্প। কিন্তু তা বাস্তবতা থেকে দূরবর্তী হয়নি। তিনি বাস্তবকে রূপায়িত করেছেন সমাজ বিশ্লেষকের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। সমাজের কল্পিত রূপ অথবা রাজনৈতিক ভাবনার আবরণে সমাজের চেহারা-তার কোনোটি করেননি। আব্বাস কোনো ক্রমেই উদ্দেশ্যমূলক সাহিত্য হিসেবে আসেনি। এখানে বলা চলে তিনি পাঠককে নিয়ে গেছেন তাঁর জগতে যেখানে মানুষের জীবনে অভাব আছে, সংগ্রাম আছে আর আছে চারপাশের পরিবেশ নিয়ে বেঁচে থাকার শক্তি। গল্পকার তার রচনার ক্ষেত্রে যত্নবান ছিলেন। সে কারণেই রাজনীতি অথবা রাজনীতিহীনতা তার লেখাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে প্লেখানভের একটি উদ্ধৃতি পাঠকের সুবিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা যেতে পারে: ‘শিল্পী যদি তার রচনা কালের প্রধান সামাজিক প্রবণতার প্রতি অন্ধ হয়ে যান, তখন তার রচনার ভাব আধেয়র অন্তর্নিহিত মূল্য গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনিবার্যভাবে রচনার পরিণতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

 

শওকত ওসমান ৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নির্বাসিত জীবনযাপনের জন্য দেশ ছাড়লেন। লেখক তো প্রতিবাদের জন্য হাতে অস্ত্র নেবে না। তাঁর প্রতিবাদের ক্ষেত্র হবে সাহিত্য, কিন্তু তিনি এতোটাই ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন যে, পাঁচ বছরের জন্য দেশ ছেড়েছিলেন। তিনি তো জানতেন একটি জাতীয়তাবাদী শক্তির রাজনৈতিক উত্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্ব বিশেষ তাৎপর্যবাহী। একটি প্রগতিশীল চিন্তন সব সময় বহন করতেন। তাইতো ১৯৪১ সালে কলকাতায় ইকবালের মৃত্যু দিবসের আলোচনা সভায় উর্দুর বিপক্ষে বলার জন্য মুসলিম লীগের কর্মীদের হাতে মার খেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একাত্তরে যুদ্ধ শুরু হলে লড়াই করার জন্য দেশ ছাড়েন। স্বৈরাচার ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে বলার জন্য কখনোই চুপ থাকেননি। এখানেই দ্রোহী শওকত ওসমানের সাথে পরিচয় হয়।

 

অন্যপক্ষে আব্বাস তার লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও সচেতন। তার হাতে যখন লাল নিশান তুলে দেয় সরদার কুলি, তখন সে ভাবে এই লাল নিশানই তাদের জুলুম থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু সে এই নিশানকে সারাজীবন সঙ্গী করার কথা ভাবতে পারে না। কারণও খুব সহজ, তার সামনে থাকে মা আর তার কষ্ট। মায়ের কথা ভেবেই পিছিয়ে আসে। আব্বাসের এই দ্বৈত অবস্থান যেন আমাদের সমাজ থেকে জাত। তিনি ইউরোপিয় ভাবনায় জারিত হয়ে সাহিত্য সৃজনে বিশ্বাসী ছিলেন না। তাহলে হয়তো লাল নিশান হাতে নিয়ে আব্বাস বিপ্লবের পথ তৈরি করতো। তিনি আগেই জানতেন, কোনো প্রচারপত্র তৈরি করবেন না। কিন্তু অবচেতনমনে নিজের ছায়া তৈরি করে নেন শওকত ওসমান। সম্ভবত এ জন্যই তার তৈরি চরিত্র আব্বাস ভাবে- অভিশপ্ত জীবনযাপনের সমাপ্তি হওয়া দরকার।

 

আব্বাস আর শওকত ওসমানের এক ছায়া কথোপকথন পাওয়া যায় গল্পে। যার ফলে বাংলা সাহিত্যে সমাজ বিশ্লেষণধর্মী গল্প পাওয়া যায়। আবার একই সাথে একটি শ্রেণিবিভক্ত সমাজে মা আর সন্তানের সংকটময় জীবনের সাথে পরিচয় ঘটে। যেখানে তারা দুজনেই সচেতন শ্রেণি বিভাজন তাদের জন্য নানা বিপদের চিহ্ন নিয়ে চলছে। মা তার কিশোর ছেলেকে পাঠিয়ে দেন শহরে অর্থ আয়ের জন্য, ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আব্বাস শহরের পথে যায় মায়ের অভাব দূর করতে। স্রষ্টা আর সৃষ্টির কথোপকথনের মধ্য দিয়ে শওকত ওসমান যে গল্প তৈরি করেন তা আমাদের ভাবনার গতি বদলাতে অনিবার্য হয়ে যায়।

 

লেখক : নাট্যকার ও গবেষক

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জানুয়ারি ২০১৭/তারা