শিল্প ও সাহিত্য

বৈশাখের পঙ্‌ক্তিমালা

বিদায়ী বৃষ্টিতে ভেজা প্রকৃতির প্রতীক্ষার মতো প্রসন্ন, রঙিন, মুগ্ধ পরিপাটি হয়ে থোকা-থোকা ফুটে আছে অপড়ন্ত মানুষের ভিড়

একটা ভিড়ে হেসে আছে আয়নায় আলো-ফেলা হাসি নাগরদোলার ভিড়ে কেউ কেউ আনন্দে অধীর একটা ভিড়ে হাঁড়ি-কুড়ি ঘরকন্না মাটির পুতুল খুশি ও বিষণ্ন সুরে বেজে যাচ্ছে বাঁশি একটা ভিড়ে আলতা ফিতা বেলোয়ারি চুড়ি           সোলার উড়াল-পাখি উচ্ছ্বলিত কাগজের ফুল একটা ভিড়ে এই বুঝি কাটা পড়বে ডোরাকাটা ঘুড়ি

চারিদিকে ছোট-মেজো কত বিকিকিনি

ব্যস্ততার বোঁটা ছিড়ে ঝরে গেছি দ্বৈত সঙ্গী হয়ে আমি আর বাল্য পড়োশিনী

আচ্ছা বলো তো দেখি-              যুদ্ধ ও ক্ষমতা যদি অলটারনেটিভ হয়, আর যারা পালাই পালাই করে              দেশ ছেড়ে যায় শহরের অলিগলি হতে      টায়ার পোড়ার ঘ্রাণে কিছু নারী গর্ভবতী হয়

আচ্ছা বলো তো দেখি তুমি ভালোবাস রাজা আর আমি রসিক ভ্রমরা ফিসফিস গান আমি রচনা করেছি ঢের আমিও বৈশাখ হতে              খরতপ্ত রোদে শুকিয়ে সযত্ন করি এ পোড়া হৃদয়

বিচ্ছেদ ও বিরহ যদি          অলটারনেটিভ হয় নিমগ্ন কবিরা যদি          দীর্ঘ বরষায় কামনার চোরাগলি সেঁটে দেয় তালা আমিও নিমগ্ন থাকি চোরাবালি স্রোতে- আর কবিতায় যা-তা লিখে যে বা যারা কবি হয়ে ম’লো আচ্ছা বলো তো দেখি            দেয়ালে খোঁড়লে যে সকল প্রেমপদ্য            ঝোলে পোস্টারে এই সব লিরিক ও রক্তই যদি              সমার্থক হয় প্রীতি ও প্রসঙ্গ ওঠে             রাজার সকাশে আর ওড়ে বিহঙ্গ কিছু     আকাশে বাতাসে এই নব বৈশাখে মানুষই জঙ্গলে বাস, আর             পশুরা প্রাসাদে আচ্ছা বলো তো দেখি ব্যাপক ঘর্ষণে জন্ম ধরা যাক শুভ্ররঙ বাড়ি     মস্ত এক বিকৃত পশু এই ঘরে বসবাস তারই! পেন্টাগনে ঝড় ওঠে               বারুদে সরোষে আরও গীত যা যা তার ঘুম ডেকে আনে সে কি তা জানে           সে কি তা জানে!!

ভোর হলো ভোর হলো চারিদিকে আলো; আর তার জন্মান্ধ বাড়ি     আছে চির অন্ধকারই!!

পাতা ঝরে যাবে সেকথা গাছকে জানানো যাবে না বৈশাখ কোনোদিন ফাল্গুনের বেদনা বোঝে না কতবার বলেছি তোমাকে ঝরে পোড়া ফাল্গুন হও ভেতরে ভেতরে ঝরো মরে থাকো মাটিতে লুকাও পায়ের তলায় পিষে পরাণের ধুলোপড়া খালি শূন্য চাকতির বাজারে ভরে তোলো মহাজন মালি দেখো কতো বীজতলা শস্যগোলা হিসাব অফুরান বৈশাখের অপেক্ষায় পুড়ে গেল ফাল্গুনের গান গোপনে প্রকাশ্যে ঝরে কালিদাস অসুখ সারাবে না বর্তমান কবির শোক কবিতার অপেক্ষায় থাকে না মনের ভেতরে গাছ মৃত্যু রোজ শাখা-প্রশাখায় সেই তো সৌভাগ্যবান যে তোমারে ধারে কাছে পায় ফাল্গুনে ঝরে গেলে অবশিষ্ট কুড়িতে ধরে ফুল প্রত্যেক বৈশাখ জানে উড়িয়ে নেয়ার মস্ত ভুল ভুলের কামট-কলা জগতের আরাধনা ভাবে আহত হাওয়ার ঘর ভুলের থালায় দুধ-কলা খাবে

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ এপ্রিল ২০১৮/তারা