শিল্প ও সাহিত্য

বাদুড়গুলো শূন্যে উড়াল দেয়

রাইজিংবিডি২৪.কম:

কিছুতেই ঘুম আসছে না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আকাশ-পাতাল ভাবছে। কামরাঙা গাছ থেকে বাদুড়ের পাখা ঝাপটানোর শব্দ আসে। বিছানা ছেড়ে সে আলগোছে জানালা খুলে দেয়। তার ভয়— মা জেগে যাবে। জানালা খোলার শব্দে বাদুড়গুলোও যেন ভয় না পায়— এটাও সতর্কতার একটা কারণ। এটা কোন মাস— মনে করতে পারে না সে। ধ্যাত্তোরি! ভাদ্র-আশ্বিনে কী আসে যায়! বিরক্তি ঝাড়ে। কামরাঙা গাছের এক ডাল থেকে আরেক ডালে ছুটোছুটি করছে বাদুড়গুলো। বাদুড়গুলো কেমন অদ্ভুত! সে ভাবে— সে যদি বাদুড় হতো... পেটটা মোচড় দিয়ে ওঠে। অনেক কষ্টে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে জানালার সামনে বসে পড়ে সে। যদি বাদুড় হতো— অন্ততপক্ষে এই কষ্ট ভোগ করতে হতো না তাকে— ভাবে সে। কাঁদতে ইচ্ছা করে— কিন্তু কান্না আসে না। হঠাৎ পেট স্পর্শ করে, পেটের উপর দিয়েই লিভার খোঁজার চেষ্টা করে সে। লিভার কি তার সত্যিই ড্যামেজ হয়ে গেছে! সে কি সত্যিই মরে যাবে? বিশ্বাস হতে চায় না... ঈদের পরই তো বিয়ে হওয়ার কথা। এই এক মাসে কতো স্বপ্ন দেখেছে গোপনে। ঠিক করে রেখেছে, কোনও এক জোছনা রাতে বরকে নিয়ে চুপিচুপি খোলামাঠে বসে সারারাত জোছনা দেখবে। এমনকি একটা বাবুমণির স্বপ্নও দেখে ফেলেছে। আর ভাবতে পারে না সে... নাহ, তার বিয়ে হবে— নিজেকে আশ্বস্ত করে। পেটের ভেতর আবার মোচড় দিয়ে ওঠে। যেন হাজারটা বাদুড় পেটের ভেতর কিচির মিচির শুরু করেছে— যেন এখনই পেট ফুঁড়ে বের হয়ে উড়তে শুরু করবে। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে— পারে না। রাতের নৈঃশব্দ্যকে ছত্রখান করে প্রচণ্ড শব্দে মেঝেয় ঢলে পড়ে সে। বাদুড়গুলো ডানা ঝাপটে শূন্যে উড়াল দেয়...