শিল্প ও সাহিত্য

ছনাও জমিদারবাড়ির কথা

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নের ছনাও গ্রাম। এ গ্রামেই অবস্থিত ছনাও জমিদারবাড়ি। কয়েকশ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় এ জমিদারবাড়িটি। পূর্ব পুরুষদের তৈরি এ বাড়িতে এখনো জমিদারদের বংশধরেরা বসবাস করছেন।

 

জমিদারের বংশধর সত্য গোপাল দাশ চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ হয়। তিনি জানান, প্রায় তিনশ বছর আগে এখানে তাদের পূর্ব পুরুষেরা জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। বংশ পরম্পরায় তারা এখনো এ বাড়িতেই বসবাস করে আসেছেন।

  সে সময় বিশাল এলাকা নিয়ে জমিদারি শুরু করেন রাধা গোবিন্দ দাশ চৌধুরী ও রায় কেশব দাশ চৌধুরী। তাদের সময়ে প্রজারা সুখেই ছিল। জমি চাষাবাদ করে লাভবান হয়ে জমিদারি খাজনা প্রদান করেছে ঠিকঠাক। এতে করে দিন দিন এ জমিদারদের জমিদারী এগিয়ে যায়।

 

এ জমিদারদের পরবর্তী বংশধরেরা হবিগঞ্জ সদর, চুনারুঘাট ও বাহুবলের বিভিন্ন এলাকায় জমিদারি পরিচালনা করেন। সর্বশেষ জমিদারি সমাপ্ত হয় রাজেন্দ্র লাল দাশ চৌধুরী, রবীন্দ্র লাল দাশ, মহেন্দ্র লাল দাশ চৌধুরীর শাসনামলে এসে। সেই আমল থেকে এখন পর্যন্ত তারা বংশানুক্রমে এ বাড়িতেই বসবাস করছেন বলে জানান সত্য গোপাল।

  তিনি বলেন, ‘সে সময়ের কিছু কিছু কীর্তি এখনো এ বাড়িতে টিকে আছে। তার মধ্যে অন্যতম দোল মন্দির, পুকুর, ভবন, ঘাটলা, তুলশী পূজার মন্দিরসহ আরো অনেক কিছু। এ ছাড়া ১৩০৩ বাংলা সালে একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেই ভবনটিসহ ৪৪ শতক জমি শংকর জ্যোতি মঠ ও মিশনের নামে দান করেছেন। প্রতি বছর এ মিশনে দুইবার বড় উৎসব হয়। এ ছাড়া প্রতিদিন এখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এসে দর্শন করে যান।

  জমিদারদের বর্তমান বংশধর সত্য গোপাল জানান, তারা ভালই আছেন। সেই সঙ্গে পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

  তবে ছনাও জমিদারবাড়িতে যেতে হলে রাস্তায় বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দর্শনার্থদের সেই দুর্ভোগ কমাতে সরকারিভাবে তিনি একটি পাকা রাস্তার দাবি জনিয়েছেন।

     

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/মামুন চৌধুরী/সনি