নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানার এসআই ইমরুল কায়েস আজ বুধবার বিকেলে ডাইয়ারকান্দা বাজারে চাঁদা দাবির অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন।
উত্তেজিত এলাকাবাসী তার মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং গায়ের কাপড় ছিড়ে ফেলে। তিনি হ্যান্ডকাপ ফেলে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় কলমাকান্দা থানায় ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। তবে ইমরুল কায়েস এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, এসআই ইমরুল কায়েস বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের ডাইয়ারকান্দা বাজারে যান। এ সময় বাজারে আবু বক্করের চায়ের দোকানে স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের ছেলে আলামিন কয়েক বন্ধুকে নিয়ে আলাপ করছিলেন। ইমরুল কায়েস তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে আলামিনকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখান।
টাকা আনার কথা বলে আলামিন দোকান থেকে বের হয়ে বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানান। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। উত্তেজিত এলাকাবাসী ইমরুল কায়েসের ওপর চড়াও হয় এবং তাকে বেধড়ক মারপিট করে গায়ের কাপড় ছিড়ে বিবস্ত্র করে ফেলে। তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং হ্যান্ডকাপ রেখে দেয়। ইমরুল কায়েস দৌঁড়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হ্যান্ডকাপ ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এ কে এম মিজানুর রহমান অফিস আদেশ না নিয়ে ওই এলাকায় যাওয়ার জন্য ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে বিকেলে থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন।
ডাইয়ারকান্দা বাজারের ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলে কয়েক বন্ধুকে নিয়ে চায়ের দোকানে গল্প করছিল। দারোগা সাহেব তার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা চায়। টাকা না দিলে তাকে হ্যান্ডকাপ পরানোর ভয় দেখান। এলাকার মানুষ জানতে পেরে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে।’
কলমাকান্দা থানার এসআই ইমরুল কায়েস তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ডাইয়ারকান্দা বাজারের পাশে একটি দোকানে আলামিনসহ কয়েকজন তীর কাউন্টারে জুয়া খেলছিল। আলামিনকে হাতকড়া পরানো হলে অন্যরা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ কয়েকজনের সঙ্গে আমার ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।’
কলমাকান্দা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইমরুল কায়েসকে কোর্টে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল, সে অফিস আদেশ উপেক্ষা করে ডাইয়ারকান্দা বাজারে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনেছি। এ জন্য কলমাকান্দা থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তলব করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে জেনে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাইজিংবিডি/নেত্রকোনা/৩০ নভেম্বর ২০১৬/ইকবাল হাসান/বকুল