সারা বাংলা

শোকাচ্ছন্ন জৈন্তাপুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : মাত্র একদিন আগেও গ্রামের পরিবেশ ছিল প্রাণবন্ত। স্বাভাবিক সহজ-সরলতায় দিনযাপন ছিল এলাকার সবার। কিন্তু একদিনের ব্যবধানেই বদলে গেছে দৃশ্যপট। প্রাণোচ্ছলতা হারিয়ে গেছে শোকের ছায়ায়। ঘিরে আছে ভয় আর শঙ্কা।

 

এ চিত্র সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের। বিষাক্ত পটকা খেয়ে ইউনিয়নের মোহাইল গ্রামের পাঁচজন এবং পার্শ্ববর্তী থুবাং গ্রামের একজনের মৃত্যুতে দরবস্ত ইউনিয়ন ছাড়িয়ে শোক যেন পুরো উপজেলাকেই ঘিরে ধরেছে।

 

পটকা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া আরো প্রায় ৪০ জন ভর্তি রয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। এরমধ্যে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি ১১ পুরুষের মধ্যে ৭ জন এবং ১৩ নারীর মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

 

এ ছাড়া সিলেট নগরীর ওয়েসিস হাসপাতালে ভর্তি ৯ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এসব অসুস্থ লোকদের স্বজনরা আছেন ভয়ের মধ্যে। কখন কোন খারাপ খবর শুনতে হয়, এ আতঙ্ক তাদের মধ্যে।

 

বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে মঙ্গলবার একে একে মারা যান মোহাইল গ্রামের আবদুর রহিম (৬০), তার ছেলে সুলেমান হোসেন (২৫) ও লোকমান হোসেন (২২) এবং প্রতিবেশী আনিসুল হকের ছেলে রাহিন (৮) ও মনি বেগম (১০)। আজ বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পার্শ্ববর্তী থুবাং গ্রামের আবদুল মুতলিবের স্ত্রী শফাতুন নেসা।

 

এদিকে বুধবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে মৃত পাঁচজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শফাতুন নেসার দাফন রাত ১০টায় হওয়ার কথা রয়েছে।

 

জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, ছয়জনের মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোক বিরাজ করছে। পাঁচজনের জানাজায় এলাকার শত শত মানুষ অশ্রুসিক্ত চোখে অংশ নেন।

 

প্রসঙ্গত, পটকা একটি বিষাক্ত জলজ প্রাণী বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ওসমানী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নাজমুল আলম জানান, পটকায় টেট্রাডক্সিন নামে বিষ থাকে। এ বিষ সাপের বিষের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তবে পানি ও পরিবেশভেদে পটকায় বিষের তীব্রতা কমবেশি থাকে। পটকা খাওয়া যাবে না কিছুতেই।

   

রাইজিংবিডি/সিলেট/৭ ডিসেম্বর ২০১৬/কামাল/রিশিত