সারা বাংলা

হালসা ব্রিজ এখন মরণ ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোরের মণিরামপুরে গজশ্রী খালের ওপর নির্মিত হালসা ব্রিজের দুই মাথা এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্ষায় প্লাবিত হয়ে পাড়দিয়া-হালসা সংযোগ রাস্তাটি দেবে যাওয়ায় ব্রিজটি রাস্তা হতে কয়েক ফুট উঁচু হয়ে পড়েছে। ফলে সাইকেল, ভ্যান, মোটরসাইকেল নিয়ে ব্রিজের ওপর উঠতে বিপদের মুখোমুখি হন যাত্রীরা। আবার অনেকে শিকার হন দুর্ঘটনার। ফলে রাস্তা সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করাই এখন পথচারীদের জোর দাবি। স্থানীয়রা জানান, পাড়দিয়া-হালসা দুই কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি পাকাকরণের দাবি এলাকাবাসীর বহু দিনের। একই সঙ্গে সড়কের গজশ্রী খালের ওপর পাকা ব্রিজের দাবি করে আসছিলেন তারা। জনগণের দাবির মুখে কয়েক বছর আগে পাড়দিয়া বাজার হতে  এক কিলোমিটার রাস্তা ইটের সলিং হয়। বাকি এক কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা থেকে যায়। অবশ্য এক বছর আগে গজশ্রী খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। ব্রিজ নির্মিত হওয়ার পর রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীর সংখ্যা বেড়ে যায়। গত বর্ষা মৌসুমে দুই দফা টানা বর্ষণে সড়কটি প্লাবিত হয়। প্রায় এক মাসেরও অধিক সময় ধরে রাস্তায় কোমর পানি জমে থাকে। এতে মাটি ধুয়ে গিয়ে রাস্তাটি ব্রিজ হয়ে কয়েক ফুট নিচু হয়ে যায়। ফলে সড়কে চলাচলকারী পথচারীদের জন্য ব্রিজের ওপর উঠতে ও নামতে বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। অনেকে আবার ব্রিজে উঠতে গিয়ে খালে পড়ে আহত হয়েছেন। অনেকের ভেঙেছে গাড়িও। তা ছাড়া সড়কটিতে রাতে চলাচল আরো বিপদজনক। পাড়দিয়া গ্রামের বৃদ্ধ তবিবর জানান, ব্রিজ হওয়ার পর এই রাস্তা দিয়ে রামনাথপুর, লক্ষণপুর, চন্ডিপুর, রাজগঞ্জ, চাকলা, হালসা, পাড়দিয়া, লাউড়ী, সুন্দরপুর, আঘরহাটিসহ কয়েক গ্রামের মানুষ সকাল হতে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করত। বর্ষায় রাস্তা বসে যাওয়ায় ব্রিজের ওপর উঠতে মানুষের কষ্ট হয়। ফলে এই রাস্তায় লোকের যাতায়াত এখন কমে গেছে। স্থানীয় ফজলুর রহমান জানান, রাস্তা বসে যাওয়ার পর মানুষ মোটেও যাতায়াত করত না। আমরা ব্রিজের দুই পাশে মাটি দিয়ে দেওয়ায় এখন আবার লোক চলাচল করে। ফজলুর রহমান আরো জানান, হালসা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ভ্যান নিয়ে ব্রিজের ওপর উঠতে গিয়ে নিচে খালে পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। ভ্যানটিও ভেঙেছেন। তা ছাড়া অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নিচে পড়েছেন বলে জানান ফজলুর রহমান। কথা হয়, কপোতাক্ষ সার্জিক্যাল ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী লিটু নামের এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিদিন রাজগঞ্জের বাড়ি হতে এই পথে কেশবপুর ক্লিনিকে যাই। ব্রিজের ওপর উঠতে গিয়ে খুব ভয় হয়। তারপরও যাওয়া লাগে। তিনি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানান। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউনুস আলী বলেন, রাস্তাটি বসে যাওয়ায় ব্রিজের ওপর উঠতে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। অনেকে নিচে পড়েও যান। আমরা রাস্তা সংস্কারের জন্য আবেদন করেছি। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে। শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, জনগণের চলাচলে কষ্টের কথা ভেবে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় নতুন মাটি ফেলা হবে।  আগামী জুনের মধ্যেই রাস্তার বাকি অংশ সলিং করা হবে জানান ওই চেয়ারম্যান। রাইজিংবিডি/যশোর/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/বি এম ফারুক/রিশিত