সারা বাংলা

ঝালকাঠিতে পুলিশ কর্মকর্তা ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : কলেজছাত্রকে শারীরিক নির্যাতন ও চুরির মিথ্যা মামলায় আসামি করে হয়রানির অভিযোগে ঝালকাঠির রাজাপুর থানার ওসিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা ও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদানান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে। আদালতের বিচারক রুবাইয়া আমেনা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলার বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। মামলার আসামিরা হলেন রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস, উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক সঞ্জীবন বালা ও রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেল। মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজাপুর উপজেলার টিঅ্যান্ডটি সড়কের মৃত শাজাহান আলীর ছেলে স্থানীয় বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদানানকে গত ৭ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে বাসা থেকে থানায় ডেকে পাঠান ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস। থানায় আসলে আদনানকে চোর বলে সাব্যস্ত করা হয়। একটি চুরির মামলায় জোরপূর্বক তার স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় ওসির কক্ষে আটকে আদনানকে বেধড়ক পেটায় পুলিশ। ওসিকে সহযোগিতা করেন এসআই নজরুল ইসলাম ও এএসআই সঞ্জীবন বালা। মারধরের এক পর্যায় আদনান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. আজম তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য বলেন। আদনানকে বরিশাল নেওয়া হচ্ছে এমন খবর ওসির কাছে পৌঁছলে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেলকে ম্যানেজ করেন। ডা. রাসেল অসুস্থ আদনানকে বরিশাল না পাঠিয়ে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ভর্তি করেন। ফলে আদনানের সুচিকিৎসা হয়নি। পরদিন ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় শিক্ষক ওয়ালিউর রহমানের বাসায় চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে রাজাপুর থানা পুলিশ আদনানকে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জেলখানায় সে হাসপাতালে ছিল। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পায় সে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৪ জানুয়ারি থেকে টানা ছয়দিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয় আদনান। এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, আদনানকে আটক করার পর থেকেই সে অসুস্থ থাকার অভিনয় করেছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি, মারধরের প্রশ্নই আসে না। রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/অলোক সাহা/রুহুল