সারা বাংলা

পুলিশকে ছুরিকাঘাত : জঙ্গি আমিজুলের বাড়িতে তালা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দুই সদস্যের ওপর হামলার পর জেএমবি সদস্য আমিজুল ইসলামের (২৬) পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনার পর থেকেই বাড়িটি তালাবদ্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বুধবার দুপুরে গোদাগাড়ী পৌরসভার বুজরুক রাজারামপুর মহল্লায় আমিজুলের ওই বাড়িটিতে গেলে প্রতিবেশীরা জানান, এলাকার আতাউর রহমানের তৃতীয় স্ত্রীর ছেলে আমিজুল। সে আতাউরের ওরসজাত সন্তান নয়। আমিজুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরহরিশপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় থাকত। তবে মাঝে-মধ্যে সে তার মায়ের কাছে আসত। মঙ্গলবার রাতে এই আমিজুলকেই আটক করতে যান বগুড়া জেলা ডিবির তিন সদস্য। এ সময় বাড়ি থেকে মাত্র কিছুদূরে দুই পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে আমিজুল। এতে কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন ও আবদুস সালাম গুরুতর আহত হন। পরে তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আবদুস সালামের পেটে পর পর কয়েকটি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। আর কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনের মাথায় অন্তত পাঁচ জায়গায় ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তারা এখন শঙ্কামুক্ত। আমিজুলের ব্যাপারে তার প্রতিবেশীরা বলছেন, এলাকার অনেক মানুষ তাকে চেনেনই না। একা একা চলাফেরা করত। মসজিদে গিয়ে সে নামাজের পর দোয়া করার বিরোধিতা করত। তার কথাবার্তায় ছিল উগ্রতা। আমিজুল নির্মাণশ্রমিকের কাজ করত। তবে সে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে বলেও অনেকের কাছে বলেছিল। এক বছর আগে থেকে আমিজুল পাঞ্জাবি পরতে শুরু করে। মাথায় টুপিও পরে। দাড়ি রাখে। আমিজুলের বাবা আতাউর রহমান আগে জুয়া ও মাদকে মেতে থাকতেন। তবে সম্প্রতি তিনিও নিজেকে বদলে ফেলেছেন। মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত আযান দিয়ে মুয়াজ্জিনের ভূমিকা পালন করতে শুরু করেন। তাদের বাড়িতে মাঝে-মধ্যে অচেনা নারীদের ইসলামি বৈঠকও হতো। গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিপজুর আলম মুন্সি জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে এর বেশি তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া জানান, অত্যন্ত গোপনে ডিবি পুলিশের সদস্যরা জঙ্গি আমিজুলের গতিবিধি নজরে রেখেছিলেন। এ বিষয়টি তিনি জানতেন। তবে ঘটনার পর জঙ্গি আমিজুলকে আটক করা সম্ভব হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে কিছু জানাতে চাননি এসপি। এদিকে বগুড়া ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলামের সরকারি মুঠোফোনটি বুধবার সারাদিন বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই এ ব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রাইজিংবিডি/রাজশাহী/১ মার্চ ২০১৭/তানজিমুল হক/রিশিত