সারা বাংলা

প্রেমতলায় অভিযান শেষ, ৪ জঙ্গি নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষ হয়েছে। এ অভিযানে এক নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন সোয়াত টিমের দুই সদস্যসহ চার জন। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম চার জঙ্গি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সীতাকুণ্ডে চৌধুরীপাড়ার ‘ছায়ানীড়’  নামের বাড়িতে অভিযান সম্পন্ন করার পর পুলিশ সেখান থেকে ২০ জনকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে। জঙ্গিবিরোধী এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন অ্যাসল্ট-১৬’।  অভিযান সম্পন্ন করার পর সকাল সোয়া ১০টায় ঘটনাস্থলে ডিআইজি শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চারটি ডেডবডি সেখানে দেখেছি। তাদের দুজনের শরীরে ছিল সুইসাইড ভেস্ট। বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। আর দুজন মারা গেছে পুলিশের গুলিতে। তাদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ায় চেহারা ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে না।’ তিনি আরো জানান, অভিযান প্রাথমিকভাবে সমাপ্ত হলেও তাদের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা ভেতরে কাজ করছেন। ওই বাড়ির বিভিন্ন ফ্ল্যাটে আটকে থাকা তিন পরিবারের ২০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডে তিন পুলিশ সদস্য এবং গ্রিল কাটতে গিয়ে ফায়ার ব্রিগেডের এক সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান শফিকুল ইসলাম।  

 

এর আগে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এবং সোয়াতের সমন্বিত বাহিনী সকাল সোয়া ৬টার দিকে অভিযান শুরু পর জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এরপর বাড়ির ভেতরে বিকট শব্দে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বাড়ির ছাদ অনেকটা উড়ে যায়। ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক জহির উদ্দিন বলেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষ। এখন বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জঙ্গিদের কাছে শক্তিশালী বোমা ছিল, যা অপারেশনের সময় তারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। বোমা বিস্ফোরণে তারা নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে বুধবার দুপুরে সীতাকুণ্ড সদরের নামার বাজার এলাকায় একটি বাড়িতে জঙ্গিরা বসবাস করছে বলে বাড়ির মালিকের সন্দেহ হয়। জঙ্গিদের ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে বাড়ির মালিক থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ‘সাধন কুঠির’ নামে ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর সেখান থেকে জঙ্গি দম্পতি ও তাদের চার মাস বয়সের এক শিশুকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে বিপুল গ্রেনেড ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।

 

আটক দুজনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ড ডিগ্রি কলেজের পেছনে প্রেমতলা চৌধুরীপাড়ার ‘ছাড়ানীড়’ নামে অপর একটি ভবন ঘিরে ফেলে।  সেখানে অভিযান চালাতে গেলে বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে সীতাকুণ্ড থানার ওসিসহ (তদন্ত) ‍দুজন আহত হন। তাদের চট্টগ্রাম সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর পুলিশ পিছু হটে। পরে রাত একটার দিকে দু্টি মাইক্রোবাস ও একটি পিকআপভ্যানে করে ঢাকা থেকে সোয়াত টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এর আগে ঢাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আর চট্টগ্রাম থেকে র‌্যাব, সোয়াত (স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস) ও পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যরাও সেখানে অবস্থান নেন। এরপর সকাল সোয়া ৬টা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবগুলো ইউনিট অভিযান শুরু করে। অভিযানের সময় বাড়ির ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।

   

রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৬ মার্চ ২০১৭/রেজাউল/উজ্জল /এএন