সারা বাংলা

ক্ষুদ্র ডিমের জন্য গেল বৃহৎ প্রাণ

নরসিংদী প্রতিনিধি : বেশি কিছু নয়, কোয়েল পাখির দুটি ডিমের জন্য প্রাণ গেল আট বছর বয়সি স্কুলছাত্রী মিতুর। ঘটনার পর গ্রেপ্তার হওয়া মিতুর সৎমা আদালতে জবানবন্দিতে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। মিতু নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ পূর্বপাড়া গ্রামের ইমাম আলীর মেয়ে। সে জেএমজি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মিতুর লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সৎমা ফারজানাকে (৩৫) আটক করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। এরপর মিতুর বাবা ইমান আলী রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুধবার বিকেলে নরসিংদীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজমিন সুলতানার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ফারজানা। জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে মিতুকে মুরগির ডিম কিনে আনতে পার্শ্ববর্তী সিরাজের বাড়িতে পাঠান ফারজানা। ওই বাড়ির মুরগির ফার্ম থেকে ডিম কিনে আনার সময় কোয়েলের দুটি ডিম চুরি করে নিয়ে আসে মিতু। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মিতুকে বকাঝকা করেন ফারজানা। একই দিন সন্ধ্যায় এ নিয়ে আবারও মিতুকে মারধর করার সময় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরলে শ্বাসরোধে মৃত্যু হয় মিতুর। মৃত্যুর পর মিতুর লাশ প্রথমে বাড়ির রান্নাঘরে এবং পরে রাতের আঁধারে পার্শ্ববর্তী কলাবাগানে ফেলে রাখেন। এদিকে মিতুকে না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন তার বাবা ও প্রতিবেশীরা। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ১৮ মার্চ শনিবার দুপুরে বাড়ির পাশের একটি কলাবাগানে লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময়  মিতুর বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি মিতুর বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সৎমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি আমরা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার ঘটনা পুলিশকে জানান। মারধর করার সময় মিতু তার চুল মুঠি করে ধরার কারণে মিতুর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরেন তিনি। বেশি সময় ধরে চেপে ধরার ফলেই মিতুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ফারজানা।

   

রাইজিংবিডি/নরসিংদী/২৩ মার্চ ২০১৭/ গাজী হানিফ মাহমুদ/উজ্জল/এএন/শাহনেওয়াজ