সারা বাংলা

গাছের সঙ্গে বেঁধে সাংবাদিক নির্যাতন, তোলপাড়

মাদারীপুর প্রতিনিধি : জেলার কালকিনিতে এক সাংবাদিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। পরে একটি চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বিচার দাবি করে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে মাদারীপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা। নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ হওয়ার পরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা পুলিশ ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে কালকিনি প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি ও যায়যায়দিন পত্রিকার কালকিনি প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম নির্বাচনী প্রচারের সংবাদ সংগ্রহ করতে পূর্ব এনায়েত নগর ইউনিয়নে যান। নির্বাচনী প্রচারের ছবি তুলতে গেলে শহিদুল ইসলামের ওপর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদল তালুকদারসহ তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। পরে কালকিনি থানা পুলিশ খবর পেয়ে ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে। নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ সময় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছোট ভাই সরোয়ার তালুকদার (৩০) ও নাজমুল খান (১৭) নামে দুইজনকে আটকও করা হয়। ওই দিন বিকেলে এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের চাপের মুখে পড়ে ওই সাংবাদিকের মামলা না নিয়ে উল্টো থানায় তাকে আটকে রাখা হয়। এরপর সন্ধ্যায় শহিদুল অসুস্থ হয়ে পড়লে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে রাতে চাঁদাবাজির মামলায় শহিদুলকে গ্রেপ্তার করে কালকিনি থানা পুলিশ। পরে অবশ্য পুলিশ শহিদুলের মামলাটি নিয়েছে। শনিবার সকালে শহিদুলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এদিকে এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি ও শহিদুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে মাদারীপুর কর্মরত সাংবাদিকরা। রোববার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মাদারীপুরে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। সাংবাদিক শহিদুল ইসলামের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, পূর্বে এনায়েতনগর ইউনিয়নের বাদল তালুকদারের বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রচার করায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার উদ্দেশে এই হামলা চালিয়েছে। হামলা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, উল্টো বাদল তালুকদার তার ভাই দেলোয়ার তালুকদারকে দিয়ে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে জেলে পাঠিয়েছে। আমি এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। পুলিশের ভূমিকাও সন্তোষজনক নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার নির্দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে। মাদারীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কোনো প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা নেই। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। রাইজিংবিডি/মাদারীপুর/৯ এপ্রিল ২০১৭/বেলাল রিজভী/রুহুল