সারা বাংলা

রংপুরে গৃহবধূ হত্যায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : রংপুরের তারাগঞ্জে কল্পনা রানী নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো ওই গৃহবধূর স্বামী নৃপেন চন্দ্র (৩৫) ও তার ভাই লক্ষণ চন্দ্র (৩২)। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামের মৃত ধীরেন চন্দ্র রায়ের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় নৃপেন আদালতে উপস্থিত থাকলেও লক্ষণ পলাতক রয়েছে। আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার মনোকষা গ্রামের সুধীর চন্দ্র রায়ের মেয়ে কল্পনার সঙ্গে ২০০২ সালের মার্চ মাসে নৃপেনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কল্পনার বাবা যৌতুক হিসেবে কিছু টাকা ও আসবাবপত্র দেন। কিন্তু নৃপেন এতে সন্তুষ্ট না হয়ে আরো যৌতুক দাবি করেন। এই নিয়ে বিভিন্ন সময় কল্পনার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন নৃপেন। এর এক পর্যায়ে ২০০৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে এ নিয়ে নৃপেন ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে অন্তঃসত্ত্বা কল্পনাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরের দিন ভোরে কল্পনা মারা যায়। খবর পেয়ে সকালে তারাগঞ্জ থানা পুলিশ ওই বাড়ি থেকে কল্পনার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কল্পনার ভাইয়ের শ্যালক সতীশ চন্দ্র বাদী হয়ে নৃপেন, তার মা সমিত্রী রানী ও ছোট ভাই লক্ষণ চন্দ্রকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার দিন ওই বাড়ি থেকে সমিত্রী রানী ও নৃপেনকে আটক করলেও লক্ষণ পালিয়ে যায়। সেই থেকে তিনি পলাতক। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই বছরের ১৫ মে তিনজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন তরাগঞ্জ থানা পুলিশের উপ- পরিদর্শক (এসআই) মমতাজুল ইসলাম। পরবর্তীতে সমিত্রী রানী জামিনে বেরিয়ে আসেন এবং মামলা চলাকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর আজ দুপুরে রায় ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আকতারুজ্জামান পলাশ এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফারুক আলম। রাইজিংবিডি/রংপুর/১৮ মে ২০১৭/নজরুল মৃধা/রুহুল